ডেস্ক নিউজ:
ইতিমধ্যে কয়েকটি রোজা পার হয়েছে। এখনও বাকি বেশ কয়েকটি রোজা। তবে এ বছর প্রচন্ড গরমের রোজা পালন করতে হচ্ছে, তাই গরম ও রোজা দুইয়ে মিলে স্বাস্থ্যের দিকে দিতে হবে একটু বেশিই নজর। রোজায় সুস্থ থাকতে চাইলে এবং সুস্থ সুন্দর একটি ঈদ উপভোগ করতে চাইলে একটু বাড়তি সচেতনতা প্রয়োজন এই গরমের রমজানে।
আসুন জেনে নেই সুস্থতার জন্য আমাদের সচেতন ভাবে কোন অভ্যাস গুলো চর্চা করা প্রয়োজন:
# প্রতিদিন এক জন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিকে ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু রোজা পালন কালে পানাহার নিষিদ্ধ। তাই ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাদ্য গ্রহণ করে এ ঘাটতি পুরণ করতে হবে। তবে যতটা সম্ভাব চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করাই ভালো। আর বরফ শীতল পানি অবশ্যই পরিহার করতে হবে। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ। তাই এড়িয়ে চলতে হবে ঠান্ডা পানি।
# ভাজাপোড়া এবং তৈলাক্ত খাবার শরীরের জন্য ক্ষতি কর। সারাদিন না খেয়ে থাকার পর এই গরমে ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত খাবার খেলে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে পেটের সমস্যা হতে পারে। তাই এসব মুখরোচক তৈলাক্ত খাবার না খেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন চিড়া-দই, লাল আটার রুটি, নুডুলস, নরম খিচুড়ি ইত্যাদি খেতে পারেন। এর সঙ্গে বিভন্ন প্রকার সবজি, ফল, সালাদ, মাছ বা মাংস বা ডাল বা ডিম খেতে পারেন।
# রোজা রেখে সারাদিন খাবার না খেয়ে থাকতে হয়। তাই ইফতারের সময় একসাথে বেশি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এজন্য প্রথমে পানি, সরবত বা জুসের সাথে সামান্য কিছু খাবার গ্রহণের পর বাকি খাবার ধীরে ধীরে গ্রহণ করা হজমে সহায়ক হবে।
# রোজা রাখলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হচ্ছে সেহেরি। কখনই সেহেরি না খেয়ে রোজা রাখা উচিত নয়। আবার সারাদিন না খেয়ে থাকতে হবে বলে সেহেরিতে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। সেহেরিতে শর্করা ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, আঁশ জাতীয় সবজি, ফল ইত্যাদি গ্রহণ করুন। রান্নায় যতটা সম্ভব কম তেল ও মসলা দিয়ে রান্না করুন।
# রোজা ইফতারের পর অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় যেমন চা, কফি এবং কোমল পানীয় পান করা থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকুন। এ সময় বেশি করে পানি পান করার অভ্যাস করুন। সাথে টাটকা ফলের জুস পান করুন।
# যেহেতু এবার গরমের সময় রোজা তাই দিনের বেলায় খুব রোদ ও গরম থাকবে। এ সময় বাইরে গেলে প্রচণ্ড গরমে শরীর ঘেমে পানি বেরিয়ে যাবে। তাই দুপুরের বেলা অযথা রোদে ঘোরাঘুরি না করে ঘরের মধ্যে থাকার চেষ্টা করুন। আর এ সময় শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রা কমিয়ে আনার চেষ্টা করুন।
# যেহেতু সেহেরী খেতে ভোর রাতে উঠতে হয়, তাই একটু ঘুমের ঘাটতি হতে পারে। এ জন্য রোজা রেখে পর্যাপ্ত ঘুমের দিকেও বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রয়োজনে দিনের বেলায় কিছুটা সময় বের করে ঘুমিয়ে নিতে পারেন।
# রোজা রেখে সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার ফলে শরীর ক্লান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই রোজা রাখার সময়টাতে যথাসম্ভব ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
রমজান মাসে রোজা পালনের পরও সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন সম্ভব, যদি একটু নিয়ম মেনে চলা যায়। এ মাসে খাবারের দিকে একটু বিশেষ নজর দিলেই সুস্থ থাকতে পারবেন। বিশেষ নজর বলতে নিয়ম মেনে সুষম খাদ্য গ্রহণ। আর গরমকে মাথায় রেখেই হোক এ রমজানের খাদ্য তালিকা।