আর্ন্তজাতিক ডেস্ক।। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের পরীক্ষামূলক ব্যবহার আপাতত বন্ধ করলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(ডাব্লিউএইচও)। এই ওষুধটি বেশ কিছু দেশে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পূর্বসতর্কতার অংশ হিসেবেই তা বন্ধ করা হলো।
গত সপ্তাহে দি ল্যান্সেটে একটি প্রকাশনা সামনে আসে। সেখানে নির্দেশ করা হয় যে, এই ওষুধ কোভিড-১৯ রোগীদের শরীরে প্রয়োগ করলে তাদের মৃত্যুর আশঙ্কা বেড়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধার টেড্রস অ্যাধানম গ্যাব্রিয়েসুস এক অনলাইন প্রেস কনফারেন্সে সোমবার এই তথ্য জানান।
টেড্রস বলেন, বেশ কয়েকটি দেশ জুড়ে কয়েক শতাধিক হাসপাতাল করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য চিকিৎসা পরীক্ষা করার জন্য রোগীদের তালিকাভুক্ত করেছে, তাদেরও পূর্বসতর্কতা হিসেবে এই ওষুধটি ব্যবহারে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ডেটা সেফটি মনিটরিং বোর্ড এই ওষুধটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরীক্ষা করছে। এই সময় পর্যন্ত হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার সাময়িক বন্ধ রাখা হলো। তবে অন্যান্য পরীক্ষণ চলমান রয়েছে।
সাধারণত আথ্রাইটিসের চিকিৎসাতেও এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যেমন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলেন, তিনি এই ওষুধ খাচ্ছেন। তারপরই অনেক সরকার এই ওষুধ স্তুপ করা শুরু করে।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রীও বলেছিলেন, অ্যান্টি ম্যালেরিয়াল ক্লোরোকুইন হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ওষুধটি মৃদু কোভিড-১৯ মোকাবেলার চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
ল্যান্সেটের ওই গবেষণায় বলা হয়, এই ওষুধ খুবই ভয়াবহ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে হৃদপিণ্ডের অস্বাভাবিক গতি তৈরি করতে পারে।
শত শত হাসপাতালের ৯৬,০০০ রোগীর পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেউই এই ওষুধে উপকৃত হয়নি। সোমবার টেড্রস বলেন, তবে এটা অটোইমিউন সমস্যা ও ম্যালেরিয়ার নির্মূলে বেশ কার্যকর।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য সোয়ামিনাথান বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা শুধুমাত্র এই ওষুধের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির প্রভাব পর্যবেক্ষণ করে পরীক্ষণ আপাতত বন্ধ করেছে। আমরা শুধুই পূর্বপ্রস্তুতির ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিচ্ছি।
ডাব্লিউএইচও এমার্জেন্সি চিফ মিকাইল রায়ান যোগ করেন, তাছাড়া সংক্রমণের গতি কমে যাওয়ায় যেসব দেশ বিধি-নিষেধ শিথিল করেছে, সেখানে আবারও করোনাভাইরাসের বিস্তারের ঝুঁকি রয়েছে। সবাইকে তাই খুবই সতর্ক থাকতে হবে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস। পরে বিশ্বব্যাপী তা মহামারী রূপ ধারণ করে। সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৮৭৩ জন। এছাড়া এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৫৫ লাখ ৮৮ হাজার ৩৫৬ জনের শরীরে।