রিপন হোসেন সাজু বিশেষ প্রতিনিধি ।। করোনা সংকটে এক ব্যতিক্রমী নিবেদিতপ্রাণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ডা. মেহেদী হাসানের গল্প! তরুণ এ চিকিৎসকের কোভিট ১৯ পজিটিভ রোগীদের একক সেবায় রেকর্ড করেছেন। গভীর আগ্রহে সযত্ন সেবা। সেটাও বিনামূল্য! ডা. মেহেদী হাসান বলেন, কোভিড যুদ্ধে মনোবল সর্বাগ্রে! এ নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করেছেন। প্রতিদিন ঋদ্ধ হয়েছেন। নিজের সাহস রোগীতে সঞ্চার করেন।
রোগীর মনোবল চাঙ্গা রাখেন। তার রোগীরা সংকটের সামনের সারির যোদ্ধা। যাদের তিনি বিনামূল্য সেবা দিচ্ছেন। তিনি মনে করেন, মাঠের যোদ্ধারা ভালো থাকলে দেশ ভালো থাকবে।তার ক্লান্তিহীন নিবিড় চেষ্টায় ১৬জন ইতোমধ্য সুস্থ হয়েছেন যাদের কোভিড ১৯ পজিটিভ ছিল। এরা ঢাকা বিভাগে কর্মরত বিসিএস প্রশাসন, পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবার। একই পরিবারের সাত জনের কয়েকজন। বাকিরাও সুস্থের পথে। আত্মীয়, বন্ধু, প্রতিবেশী, সহকর্মীদেরও সেবা দিচ্ছেন।
পজিটিভ অন্যদেরও শীঘ্রই নেগেটিভ রিপোর্ট আসবে বলে আত্মবিশ্বাসী। যুদ্ধে হাতিয়ারের চেয়ে বড় মনোবল, তিনি প্রমাণ করেছেন। করোনারেগী চিকিৎসাকে তিনি ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। গভীর মমত্ববোধ, নিবিড় পরিচর্যা, পরিপালন মনিটরিংয়ে করোনার যেকোন রোগী সারিয়ে তোলা সম্ভব বলে জানালেন সুদর্শন, তরুণ, প্রতিভাবান, সজ্জন, মৃদুভাষী চিকিৎসক।
প্রচারবিমুখ অদম্য এ তরুণ নেপথ্য-যোদ্ধার নাম ডা: মেহেদি হাসান। বাড়ি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার আগরহাটি গ্রামের আলহাজ্ব জবেদ আলী সরদারের ছোট ছেলে। তার বড় ভাই দক্ষিণবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী শপিং কমপ্লেক্স যশোর সিটি প্লাজার চেয়ারম্যান এস এম ইয়াকুব আলী তিনিও করোনা সংক্রমণ রোধে এলাকায় প্রায় ২৫'শ গরীব, অসহায় ও দু:স্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন।
তিনি জনপ্রতিনিধি না হয়েও জনগণের কল্যাণে নি:স্বার্থভাবে কাজ করে চলেছেন। ডা. মেহেদী হাসান আরও বলেন, কোভিড ১৯ রোগটি আমাদের দেশে নতুন। বর্তমান সময়ে করোনারোগী চিকিৎসার জন্য সতর্কতার সাথে সাহস ও ধৈর্য্য খুব প্রয়োজন। শিক্ষিত মানুষও অনেকসময় অসহায় ও অসতর্ক হয়ে পড়েন। শৃংখলা ও পথ্যসেবন নিয়মিত হতে হবে। ডাক্তার, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা বেশী ঝুঁকিপূর্ণ।
তাদের বিনামূল্য অগ্রাধিকার চিকিৎসার কাজটি তিনি সযত্নে করছেন। সম্ভব হলে কাছে গিয়ে, টেলিফোনে, একক বা গ্রুপ ভিডিওকলে রোগী মনিটরিং করেন। নিজেই ফোন করে রোগীর খোঁজ নেন। ফোনে বার্তা দেন, ভিডিওকলে পথ্য, পরামর্শ দেন। নিজে কোয়ারেন্টাইনে থেকে রোগীসেবা দিয়ে গেছেন। আলাদা করে কোভিডের ওপর পড়াশোনার ও প্যালিয়েটিভ বিভাগে কাজের অভিজ্ঞতা তার সাফল্যে সহায়ক হয়েছে।
করোনা চিকিৎসা পদ্ধতি: ডা: মেহেদি হাসান বিশেষ অনুরোধে কোভিড ১৯ রোগী সারিয়ে তোলার পদ্ধতি ও পথ্য শেয়ার করেছেন। তিনি মাঠে কর্মরতদের পরিস্থিতিকে দুভাগে ভাগ করছেন: আক্রান্ত ও •ঝুঁকিপূর্ণ (যারা মিরপুর/নারায়নগঞ্জে কর্মরত)।
১. আক্রান্ত হলে: ট্যাবলেটঃ নাপা ৫০০মিঃগ্রাঃ (১+১+১) ৩দিন। জ্বর বেশি হলে নাপা suppository ৫০০ মিঃগ্রাঃ (পায়ুপথে দিতে হবে)।
• ট্যাবলেটঃ টোফেন/Tofen ১মিঃগ্রাঃ(০+০+১) ১৫ দিন। নাসাল/nasal ড্রপ Rynex ০.০৫% (২ ফোটা ড্রপ উভয় নাকে ৩-৪ বার প্রতিদিন দিতে হবে) ট্যাবলেটঃ Zorate ৬০ মিঃগ্রাঃ(১+০+১) ১৫ দিন।
• ট্যাবলেটঃ সিভিট/Ceevit DS(১+০+১) ১০ দিন। ট্যাবলেটঃ Esonix ২০মিঃগ্রাঃ (১+০+১) খাবার আগে দরকার হলে; এ সময় “ভিটামিন সি" বেশি করে খেতে হবে ( কমলা,মাল্টা,লেবু) কালোজিরা, মধু খেতে হবে। প্রতিদিন সকালে গরম পানির ভাপ নিতে হবে ১০ মিনিট করে প্রতিদিন ৫-৬ বার। হালকা কুসুম গরম পানিতে লবণ দিয়ে গরগর করতে হবে ৪-৫ বার। কফ বেশি থাকলে দরকার অনুযায়ী ট্যাবলেটঃ মোনাস/Monas ১০মিগ্রা (০+০+১) + ট্যাবলেটঃ Doxiva ৪০০মিঃগ্রাঃ (১+০+১) ১৫ দিন। ট্যাবলেট: Zimax ৫০০ মিঃগ্রাঃ (০+০+১) ৭ দিন।
২. ঝুঁকিতে কর্মরত হলে: আমাদের ইম্যিউনিটি বাড়াতে হবে। সে জন্যে: পর্যাপ্ত ঘুম (৬-৭ ঘন্টার বেশি) বেশি করে ভিটামিন সি, শাকসবজি, বাদাম এবং এন্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত খাবার গ্রহণ স্বাস্থ্যসম্মত চর্বিযুক্ত খাবার যেমনঃ অলিভ অয়েল, ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড খাওয়া শিশি করে Fermented foods অথবা probiotic supplements সেবন পরিমাণ মতো শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়া। সহনীয় ব্যায়ামের মধ্যে
নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করে,জলযোজিত থাকা,স্ট্রেস লেভেল ম্যানেজ করা ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, জিংক, এলডারবেরি এবং রসুন সেবন সহায়ক। রমযানে নামাজ, কুরআন পাঠ, ইবাদত দুশ্চিন্তামুক্ত, নির্ভার থাকতে ও ইম্যুউন সিস্টেম সমৃদ্ধে কার্যকর)
করোনা চিকিৎসায় ডা: মেহেদি হাসান এ যাবৎকালে বাংলাদেশ সফলতমদের অন্যতম। অসীম মনোবল, সাহাস, দেশ ও মানুষের প্রতি নি:স্বার্থ ভালোবাসা এর কারণ। তিনি অনেকের অনুপ্রেরণা হতে পারেন। যারা ভয় পেয়ে বা না জেনে দূরে আছেন, তাদের! সচেতন অচেতন পাঠকদেরও।
সম্পাদকীয়,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৩৮/১, আরামবাগ,মতিঝিল-ঢাকা-১০০০
যোগাযোগ: মোবাইল ০১৭১৩-৩৩২১৫৯- ০১৩১৮-৬৮০৩৮১
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম