ইমরান হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম গুলোতে একটা সময় ঘরে ঘরে দেখা মিলতো ধান ভানা ঢেঁকি, কালের বিবর্তনে এখন আর তেমন দৃশ্যমান দেখা যায় না কাঠের তৈরি ঢেঁকি। শীতের মৌসুমে নবান্নের আমেজে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় বাড়ির আশেপাশে ঢেঁকিতে ধান ভানার শব্দে ঘুম ভেঙে যেত। বর্তমানে ঢেঁকির শব্দে এখন আর ঘুম ভাঙ্গে না কারও। (অগ্রহায়ণেরি সাত সকালে ভাঙে সবার ঘুম, কাঁচতে হাতে কৃষাণ ছুটে ফসল কাটার ধুম, আহরে খুশি খুশি মন, নবান্নেতে রইলো বন্ধু তোমার নিমন্ত্রণ), কবির এই কবিতায় মনে পড়ে গেল আজ নবান্ন। পন্জিকা মতে ১ অগ্রহায়ণ। গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি পরিবারে ঢেঁকিতে চাল ভেঙে গুঁড়ো করে চলতো নবান্নের উৎসব। আগেকার দিনে গ্রামের মানুষ ঢেঁকিতে ধান ভানতো এবং চাল থেকে গুঁড়ো তৈরি করে পুলি পিঠা, ভাবা পিঠা, নতুন খেজুরের রসের রস পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যেত। আর আত্মীয় স্বজন এলে তো আর কথায় নেই। গ্রামে গেলে শোনা যেত সেই ঢেঁকিতে ধান ভানার শব্দ। আজ সেই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি কালের বিবর্তনে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমান গ্রামাঞ্চলে হাতে গোনা কয়েকটি বাড়িতে ঢেঁকি দেখা যায়। এক সময় যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে ঢেঁকিতে ধান ভানার প্রচলন ছিল । সে সময় পরিবারের গৃহিনীরা ধান চাল ভানার কাজ ঢেঁকিতেই করতো। মুসলমানদের ঈদ আর হিন্দুদের পূজা পার্বণ নবান্ন উৎসব পৌষের পুলি পিঠা, ভাপা ও নারিকেল পিঠা সহ হরেক রকমের পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যেত। গ্রামের বেশির ভাগ বাড়িতে নারীদের ঢেঁকিতে ধান চাল ভানার কলরবে চারিদিকে যেন হৈচৈ পড়ে যেত। আগেকার দিনে গরীব পরিবারের মানুষ ধান, চাল, গম ভানার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। আবার কেউ কেউ ঢেঁকিতে ভানানো চাউল বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতো। এই ঢেঁকিতে ভানানো চাল মানুষের খুবই পছন্দনীয় ছিলো এবং তার কদরও ছিলো বেশ। বর্তমানে ধান ভাঙার নতুন যান্ত্রিক মেশিন আবির্ভাব হওয়ায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢেঁকি আজ বিলুপ্তির পথে। গ্রামের কিছু প্রবীণ লোকের সাথে আলাপ চারিতায় জানাযায়, এই অঞ্চলে এক সময় ঢেঁকিতে ধান ভানার ব্যাপক প্রচলন ছিল। বিভিন্ন উৎসবের সময় প্রতিটি বাড়িতে নুতন বউ, জামাই মেয়ে আত্মীয় স্বজনদের উপস্থিতিতে বাড়িতে সৃষ্টি হতো আনন্দ মুখর পরিবেশ। শেষ রাতে বাড়িতে নারীদের ঢেঁকিতে গুঁড়া তৈরী, ধান, চাল ভাঙার শব্দে ঘুম ভেঙে যেত। আজ আর সেই শব্দ শোনা যায় না। বিশেষ করে এই এলাকায় শীতের মৌসুমে চিতই পিঠা ঢেঁকি ভাঙানো গুঁড়া ছাড়া জমেই না। সেই ঢেঁকিতে ভাঙানো গুঁড়া দিয়ে বানানো পিঠা যে সুস্বাদু হতো বর্তমানে যান্ত্রিক মেশিনে ভাঙানো চাল গুঁড়ার সে স্বাদ এখন আর পাওয়া যায়।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ জাহাঙ্গীর আলম রাজু
হেড অফিস : প্রস্তাবিত (১ম তলা),৯৮, নয়াপল্টন,ঢাকা-১০০০
বানিজ্যিক এলাকা: বাইপাইল আশুলিয়া,সাভার,ঢাকা।
মফস্বল কার্যালয়: মেইন রোড (২য় তলা),কেশবপুর,যশোর।
নিউজ-মেইল: dailyamaderbd24@gmail.com
নিউজ রুমঃ রাজু:- ০১৭১১-১৩৯৪২০
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম