আমাদেরবাংলাদেশ ডেস্ক।। জাতির ভাগ্য ও জাতীয় অর্থনীতির সঙ্গে উচ্চশিক্ষা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর উচ্চশিক্ষা বিস্তারের অভিযাত্রায় কলেজগুলো (মহাবিদ্যালয়) এক অনন্য পথিকৃত প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের দেশাত্ববোধ জাগ্রত করতে বিদ্যাচক্রের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। যে কারনে সেখানে আয়োজন করা হয় নানান রকম অনুষ্ঠানের। তবে অনুষ্ঠানের নামে যে কোন অশ্লীলতাই বাংলা সংস্কৃতির অপমান। আর এরকম আয়োজন যদি খোদ কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (ডিগ্রী কলেজ) করা হয়। তাও আবার ডিজে পার্টির হিন্দি গানের অসংযত নাচের তালে তালে। তাহলে বাংলা সংস্কৃতিকে যেমন অপমান করা হয় ঠিক তেমনি আবার বাংলা ভাষারও অমর্যাদা করা হয়। সেক্ষেত্রে আয়োজক প্রতিষ্ঠানের চেতনাবোধ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়।
এমনি ঘটনার অভিযোগ উঠেছে খুলনার ডুমুরিয়া মহাবিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে। ওই প্রতিষ্ঠানটির পিকনিক অনুষ্ঠানে ‘অশ্লীল নাচের’ একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমড়ি খেয়ে মানুষ দেখছে সেই ভিডিওটি। নানান রকম কটাক্ষ ও বিরুপ মন্তব্যও করছে তারা। এমকি ডুমুরিয়া মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এরূপ অপসাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও তাদের নৈতিক চরিত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা ।ঘটনাটি ঘটেছে এক বছর আগের একটি পিকনিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কলেজের ক্লাস রুমে। সেখানে ছাত্রী-শিক্ষক একসাথে অশ্লীল ভাবে অসংযত নৃত্য করছে। বেজে চলেছে ডিজে পার্টির হিন্দি গান। তাতে উপস্থিত আছেন ডুমুরিয়া মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রঞ্জন কুমার তরফদার, প্রভাষক মোসলেম উদ্দীন সরদার, প্রভাষক সত্য রঞ্জন রাড়ৈসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্রী।
ভিডিওটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয়েছে নানান সমালোচনা। অবিভাবকরা বলছেন, ‘একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজের পিকনিকের অনুষ্ঠানে এ ধরনের অশ্লীল পরিবেশনা খুবই দুঃখজনক। এতে অবিভাবকরা চরম হতাশ। দেশীয় সংস্কৃতি পরিবেশন বাদ দিয়ে কলেজের কক্ষে ছাত্রী-শিক্ষকের অসংযত নৃত্য সামাজিক ভাবে মেনে নেওয়া যায় না।’ডুমুরিয়া মহাবিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র পরিষদের একাধিক নেতারা বলেছেন, ‘একটি পিকনিকের অনুষ্ঠানে এ ধরনের অশ্লীল নাচ পরিবেশনে আমরা মর্মাহত। এই কলেজ আমাদের অনেক স্মৃতি বিজাড়িত একটি প্রতিষ্ঠান।
যারা এই কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। নতুবা আমরা কঠোর আন্দোলনের ডাক দিব।’ডুমুরিয়া মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রঞ্জন কুমার তরফদার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা দেড় বছর আগের একটি ঘটনা। তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা সফরের একটি আবেদন করে ছিলেন তখনকার অধ্যক্ষের কাছে। তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পিকনিকের অনুমোদন দেয়নি। তবে ক্যাম্পাসের ১০৫ নাম্বর কক্ষে পিকনিকের অনুমোদন দিয়েছিলেন। সেখানে শিক্ষকরা ছিল, শিক্ষার্থীরা ছিল। ছাত্র-ছাত্রীরা একটু গান বাজনা করেছিল।
পরে রান্না বাড়া করে খাওয়া দাওয়া হয়। ফুটবলও খেলা হয়। এটা কলেজ অভ্যন্তরে একটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো।’ডুমুরিয়া মহাবিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটির সদস্য খান অনিচ উদ্দিন বলেন, ‘নাচ গান করা সাংস্কৃতিক চর্চার ভিতরে পড়ে। তবে এর ভিতর একটা শ্লীলতার ব্যাপার আছে। কলেজ পিকনিকের ভিডিওতে দেখা যচ্ছে সেটা রক্ষা করা হয়নি। এটা আমরা আগে জানতাম না। জানার পর বিষয়টি আমরা বিবেচনায় নিয়েছি।’
তবে শিক্ষকরা খারাপ কোন মন-মানসিকতা নিয়ে এটা করেন নি বলে তিনি ধারনা করছেন।দায়িত্ববলে ডুমুরিয়া মহাবিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটির সভিপতি রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। বর্তমান ইউএনও মোছাঃ শাহনাজ বেগম ছুটিতে থাকায় দায়িত্বে রয়েছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জীব দাশ। তিনি বলেন, ‘আমি গতকালকে বিষয়টি অবগত হয়েছি। খুলনা-৫ আসনের এমপির সাথে একটি অনুষ্ঠানে থাকা অবস্থায় বিষয়টি জেনেছি। তিনিও (এমপি) বিষয়টি জেনেছেন। ইউএনও মোছাঃ শাহনাজ বেগম ছুটি শেষে আসলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ জাহাঙ্গীর আলম রাজু
হেড অফিস : প্রস্তাবিত (১ম তলা),৯৮, নয়াপল্টন,ঢাকা-১০০০
বানিজ্যিক এলাকা: বাইপাইল আশুলিয়া,সাভার,ঢাকা।
মফস্বল কার্যালয়: মেইন রোড (২য় তলা),কেশবপুর,যশোর।
নিউজ-মেইল: dailyamaderbd24@gmail.com
নিউজ রুমঃ রাজু:- ০১৭১১-১৩৯৪২০
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম