নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ সাত দিন অচলাবস্থার পর, সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে চলেছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ধর্মঘট তুলে নিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আন্দোলনকারীদের ৩০ জনের প্রতিনিধির সামনে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিলেন— সবার আগে দেখা হবে হাসপাতালে যাতে আর একটাও হামলার ঘটনা না ঘটে। যদি ঘটে যায়, সে ক্ষেত্রেও দ্রুত এবং কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার দুপুর তিনটেয় নবান্নে বৈঠকের কথা থাকলেও, সকাল থেকে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মতো, টেলিভিশন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা বৈঠকের লাইভ টেলিকাস্ট করতে সম্মত হয় সরকার। এ সব টানাপড়েনের শেষে বিকেল চারটে নাগাদ শুরু হয় বৈঠক।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ১২ দফা লিখিত দাবি পেশ করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রতিটি দাবিই আলাদা আলাদা করে তাঁরা বিস্তারিত বলেন মুখ্যমন্ত্রীর সামনে। এ গুলির মধ্যে, হাসপাতালে চিকিত্সকদের নিরাপত্তায় পুলিশের সংখ্যা এবং সক্রিয়তা বাড়ানোর দাবি যেমন ছিল, তেমনই ছিল রোগীদের অভাব অভিযোগের মুখোমুখি হওয়ার জন্য হাসপাতালের গ্রিভ্যান্স সেল বা অভিযোগ গ্রহণ কেন্দ্রগুলিকে সামনে নিয়ে আসার দাবিও। একই সঙ্গে বিভিন্ন হাসপাতালে রাজনৈতিক দলগুলির ‘প্রভাব’ কমানোর জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়।
এনআরএস-এর ঘটনার সময় পুলিশ উপস্থিত থেকেও যে নিষ্ক্রিয় ছিল, তা মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠকে উপস্থিত পুলিশকর্তাদের মমতা নির্দেশ দেন, এ নিয়ে যথাযথ তদন্ত করার। ভবিষ্যতে যাতে এমনটা আর না ঘটে, তা নিশ্চিত করা জন্যও পুলিশকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
বেশ কয়েক দিনের বরফ গলে, এ দিন বৈঠকের শুরু থেকেই নমনীয় দেখা যায় দু’পক্ষকে। মমতা এবং জুনিয়র ডাক্তাররা একে অপরের কথা শুনেছেন মন দিয়ে। বৈঠকে কিছু অস্বস্তিকর প্রসঙ্গ উঠলেও, সুর কখনও চড়া হয়নি। আন্দোলনকারীদের সব দাবি সঙ্গেই একমত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জুনিয়র ডাক্তাররা আশা প্রকাশ করেছেন, বৈঠকের সব সিন্ধান্ত যথাযথ প্রয়োগ সরকারপক্ষ করবেন।