প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ২১, ২০২৫, ১০:১০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ৫, ২০১৯, ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ
তাহিরপুরের যাদুকাটা চাঁদাবাজদের দৌরাত্বে অসহায় বালু পাথর শ্রমিকরা ও ব্যবসায়ীরা

আমির হোসেন,তাহিরপুর থেকে: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তবর্তী যাদুকাটা নদীতে ফের চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। কোনো ভাবেই থামানো যাচ্ছেনা এ চাঁদাবাজ চক্রটিকে। নদীতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের নজরধারি থাকা সত্তেও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চাঁদাবাজদের দৌরাত্নে অসহায় হয়ে পড়েছেন এলাকার কয়েক হাজার বালু পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। চাঁদাবাজ চক্রটি যাদুকাটা নদীর মাঝ নদীতেও তাদের জায়গার মালিকানা দাবি করে বালু ও পাথর উত্তোলনরত শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রতি শেইভ মেশিন থেকে ২ হাজার এবং প্রতি ফুট বালু থেকে ২ টাকা চাঁদা নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানাযায়, ওইসব চাঁদাবাজদের নামে তাহিরপুর থানা ও সুনামগঞ্জ আদালতে হাফ ডর্জন খানেক চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন মামলা থাকার পারও প্রকাশেই বুক ফোলিয়ে যাদুকাট নদীতে চাঁদাবাজী করে যাচ্ছে। এযেন দেখার কেউ নেই!
স্থানীয় একদিক সূত্রে জানা যায়, যাদুকাটা নদীর পূর্ব পাড়ের বিন্নাকুলী ও ছড়ারপাড় এবং পশ্চিম পাড়ের গাঘটিয়া গ্রাম সংলগ্ন বড়টেক ও টেকেরগ্রাঁও এলাকায় পাড় কেটে বালু ও পাথর উত্তোলনের দায়ে স্থানীয় প্রসাশনের পক্ষ্য থেকে যাদুকাটা নদীতে বালু পাথর উত্তোলন প্রায় ২ মাস বন্ধ ছিল। গত সপ্তাহে খানেক পূর্বে এলাকার বর্তমান, সাবেক চেয়ারম্যান সহ বালু পাথর শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষেতে নদীর পাড় থেকে নির্ধারিত সীমানার বাহিরে বালু ও পাথর উত্তোলনের অনুমতি দেয় স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনকে তোয়াক্ষা না করে প্রশাসনের নির্ধারিত সীমানার বাহিরেও মাঝ নদীতে বালু ও পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে জোড় পূর্বক চাঁদা নিচ্ছে এ চক্রটি। চক্রটিকে চাঁদা না দিলে শ্রমিকদের মারপিট করা সহ বালুপাথর উত্তোলন করতে দিচ্ছে না তারা। এ চক্রটি মাঝ নদীতেও তাদের জায়গার মালিকানা দাবি করে প্রতিনিয়ত চাঁদা উঠাচ্ছে যে যার মতো।
নাম প্রকাশে অনিছুক বেশ কয়েকজন শ্রমিক ও ব্যবসায়ী জানান, বাদাঘাট ইউনিয়নের ডালারপাড় গ্রামের জামাল মিয়া (৫০) ও গাঘটিয়া গ্রামের রানু মিয়ার নেতৃত্বে একটি চাঁদাবাজ চক্র যাদুকাটা নদীর পূর্ব পাড়ের বিন্নাকুলী ও ছড়ারপাড় এলাকায় এবং পশ্চিম পাড়ের গাঘটিয়া গ্রাম সংলগ্ন বড়টেক ও টেকেরগ্রাঁও এলাকায় গাঘটিয়া গ্রামের মজিবুর রহমান ও রুপে বাটি মাজিবুর (৫০), হাজী রহিম উদ্দিনের ম্যানেজার সাত্তার মিয়া(৪৮), মোশাহিদের ম্যানেজার সিদ্দিকুর রহমা, নাছির উদ্দিন (৬৫), জসিম উদ্দন, সামছুজ্জামান, নুরুজ আলী, তাওহিদ, কেফাজুল, হাবিকুল ও রবিউলে নেতৃতে প্রায় ৫০ জনের একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট দল মাঝ নদীতে তাদের জায়গার মালিকানা দাবি করে পাথর উত্তোলনের প্রতি শেইভ মেশিন থেকে ২ হাজার এবং প্রতি ফুট বালু থেকে ২ টাকা চাঁদাবাজী করছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মজিবুর রহমান বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, যাদুকাটা নদীর পাড়ে আমার কোন জমি নেই। ৫০ জনের একটি চাঁদাবাজ চক্র তারা নদীতে চাঁদাবাজি করে দোষ চাপায় আমার উপর। আমি এসবের সঙ্গে জড়িত নয়, আমি কৃষকের সন্তান। অভিযুক্ত রানু মিয়া বলেন, জেলা পরিষদ থেকে লিজ আনা জায়গা থেকে আমি টোল আদায় করছি এবং লিজকৃত যায়গাতে আমি ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছি বলে ।
এ বিষয়ে মোশাহিদ মিয়া বলেন, নদীতে চাঁদাবাজির সঙ্গে তিনি জড়িত নন,তার শুত্রু পক্ষ তাকে ফাঁসাতে তার নাম এসবের সঙ্গে জড়াচ্ছেন বলে তার অভিযোগ ।
বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, গাঘটিয়া গ্রামের স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চাঁদাবাজ চক্র রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় বেশ কিছুদিন যাবৎ জোড় পূর্বক বালু পাথর শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জায়গার মালিকানা দাবি করে চাঁদা আদায় করছে বলে আমাকে এলালাকার অনেকেই বলেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের বিরোদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবী জানান তিনি। তাহিরপুর থানার ওসি আতিকুর রহমান বলেন, যারা নদীতে চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত তাদের বিরোদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাহিরপুর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জী বলেন, নদীতে প্রশাসনের নির্ধারিত সীমানার বাহিরে কেউ জায়গার মালিকানা দাবি করে শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা নিলে সেটি হবে অন্যায়। এসবের সঙ্গে যারা জড়িত এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদকীয়,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৩৮/১, আরামবাগ,মতিঝিল-ঢাকা-১০০০
যোগাযোগ: মোবাইল ০১৭১৩-৩৩২১৫৯- ০১৩১৮-৬৮০৩৮১
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম