প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ২০, ২০২৫, ১:৫৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ২৬, ২০১৯, ৫:৪৪ অপরাহ্ণ
নির্দোষ প্রমাণিত’ শিক্ষার্থী, পরীক্ষায় বাধা চেয়ারম্যানের

প্রতিনি, জবি।।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা আবার শুরু হলেও পরীক্ষায় বসতে পারছেন না বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মিশু। মিশুকে পরীক্ষা দিতে না দেয়ার সিদ্ধান্তে এখনও অনড় বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিম। যদিও মিশুর বিরুদ্ধে আনা ‘ধারাবাহিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড’র অভিযোগ এরইমধ্যে প্রক্টরিয়াল তদন্ত প্রতিবেদনে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
কিন্তু নিদোর্ষ প্রমাণ হলেও বিভাগীয় চেয়ারম্যানের আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিমকে আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে একটি রিভিউ প্রতিবেদন জমা দিতে আদেশ দেয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, গত ২২ মে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান সোহান ও মাহমুদুল হাসান মিশুর নামে ‘ধারাবাহিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড’র অভিযোগ তুলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিম। এরপর গত ০৩ সেপ্টেম্বর সোহান ও মিশুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বাদী, বিবাদী ও সাক্ষীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সহকারী প্রক্টর শিল্পী রানী সাহা ও মো. মহিউদ্দিন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোহানকে সাময়িক বহিষ্কার ও মিশুর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তার একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলার সুপারিশ করা হয়।
মিশু অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কোনও সিদ্ধান্ত তোয়াক্কা না করেই আমাদেরকে কোনও ক্লাস কিংবা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেননি বিভাগের চেয়ারম্যান।’
মিশুর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনও প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলেও গত ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয়নি তাকে। পরীক্ষার হল থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয় এবং ওই শিক্ষার্থীকে পরবর্তীতে পুলিশে সোপর্দ করা ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে বের হতে না দেয়ার হুমকি দেন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিম।
এ বিষয়ে গত ২০ নভেম্বর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ‘জবিতে চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতায় শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন হুমকিতে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের সকল একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করে দেন চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিম ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘মিশুর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কোনও সুযোগ নেই। আমি তার বিষয়ে সম্মানজনক কোনও সুরাহা পাইনি। আমি বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে উপাচার্যের কমান্ডের বাইরে যেতে পারি না।’
কিন্তু এর আগে উপাচার্যের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও মিশুকে কেন পরীক্ষা দিতে দেননি- এমন প্রশ্নে জুনায়েদ হালিম বলেন, ‘আমি উপাচার্যের কথা মতই তার পরীক্ষা নিইনি। এটা এমন কোনও বিষয় না যে সাংবাদিকদের ‘কচলাকচলি’ করতে হবে।’
এ বিষয়ে জবি প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘আমরা আজ (গতকাল সোমবার) উপাচার্যের কাছে ৫৭ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। আমাদের প্রতিবেদনে মিশু নির্দোষ ছিলো। এখন এবিষয়ে রিভিউ কমিটি হয়েছে। বিষয়টা উপাচার্য দেখছেন।’
রিভিউ কমিটির সদস্য ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিমের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে এই জবি প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি এই ব্যাপারে কিছুই জানি না। মাত্র আপনার কাছে শুনলাম। আমি তো একটি প্রজেক্টের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অলরেডি তিন দিনের ছুটিও নিয়ে নিয়েছি।’
সম্পাদকীয়,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৩৮/১, আরামবাগ,মতিঝিল-ঢাকা-১০০০
যোগাযোগ: মোবাইল ০১৭১৩-৩৩২১৫৯- ০১৩১৮-৬৮০৩৮১
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম