বেনাপোল প্রতিনিধিঃ বেনাপোল চেকপোষ্ট কাস্টমস কর্মকর্তারা ঘুষ দূর্নীতি স্বজনপ্রিতি সহ সকল প্রকার দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে বৈধ পথে অবৈধ ভারতীয় চোরাচালানি পন্যর সহযোগিতায় করার অভিযোগ উঠেছে বেনাপোল কাস্টমস চেকপোষ্টের এ আরও বিজন কুমার দাস ও আশিক এর বিরুদ্ধে।
ভারত থেকে প্রতিদিন পাসপোর্ট যাত্রীদের মাধ্যেমে আসছে ভারতীয় মেয়াদ উত্তীর্ন অবৈধ পন্য। আর এই পন্য বহনকারীদের নিকট থেকে ল্যাগেজ প্রতি নির্দিষ্ট হারে অর্থ বানিজ্য করছে এ দুই কর্মকর্তা। যা প্রতিদিনের সিসি টিভি ক্যামেরা দেখলে পাবে কাস্টমস এর উর্দ্ধতন কর্মকর্তা। ঢাকা থেকে আগত আমিনুর রহমান নামে একজন পাসপোর্টযাত্রী বলেন, ভারত থেকে ফিরে আসার সময় বেনাপোল চেকপোষ্টে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি ভারতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। সখ করে সেখান থেকে আসার সময় দুই প্যাকেট চকলেট, একটি খ্রি-পিছ , দুটি শাড়ি একটি পারফিউম নিয়ে আসি। বেনাপোল কাস্টমস এর স্কানিং মেশিনে দেওয়ার পরও ব্যাগ খোলে বিজন নামে এক কাস্টমস সদস্য। সে আমার পন্য দেখে বলে, চলে যান। আমি যেতে গেলে বাধা দেয় সিভিল পোশাকে আর একজন কাস্টমস পরিচয় দান কারী লোক। পরে তার নাম শুনলাম লোকটির নাম আশিক। তিনি আমাকে বলে, ৫শ’ টাকা দেন। কি জন্য টাকা দিব বললে তিনি বলেন আপনি ভারত থেকে যে পন্য এনেছেন তার ট্র্যাক্স তো দেন নাই । ৫শ’ টাকা দিয়ে চলে যান। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তিনি আমার সাথে খারাপ আচারন করেন। খুলনার মিনতি রায় বলেন, আমি ভারত থেকে ফিরে আসার সময় বেনাপোল কাস্টমসের পোশাক বাদে একজন লম্বা মোটা লোক আমার পরিবারের কেনাকাটা দেখে ২হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে তিনি আমার পন্য রেখে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। এরপর নিরুপায় হয়ে ১ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়া পাই।
ঘুষের ব্যাপারে কাস্টমস এ আরও আশিক ও বিজনের কাছে জানতে চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা বলে এখানে সাংবাদিকের প্রবেশ নিশেধ। আমরা কি করব না করব তা দেখবে আমাদের উর্ধতন কর্মকতা। এদিকে কাস্টমস এর তল্লাশি রুম পার হওয়ার পর শুল্ক গোয়েন্দা পরিচয় দিয়ে সেখানে অনুপ নামে একজন লোক প্রতিদিনি প্রতিটি যাত্রীদের নিকট থেকে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৪/৫ শত টাকা আদায় করে। চেকপোষ্টের একটি সুত্র জানায় কানা ভিক্ষুকরা যেমন রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা তোলে এই লোকটিও দাড়িয়ে দাড়িয়ে টাকা তোলে।
সম্পপ্রতি কাস্টমস এর ঘুষ বানিজ্য নিয়ে বিজন কুমার দাস বলে আমরা সারাদিন যা এখান থেকে পেয়ে থাকি তার একটি অংশ সুপার, একটি অংশ এআরও এবং আর একটি অংশ কাস্টমস সিপাইদের দিতে হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার লোক এসে দাবি করে তাদের কিছু দিতে হয়। কাস্টমসে ঝাড়–দারের কাজ করে লাইলি বেগম জানায় সন্ধ্যার সময় সারাদিনের সব ঘুষের টাকা চা বানানোর ঘরে বসে বিজন ও আশিক স্যার ভাগাভাগি করে। কাস্টমসের জনৈক সিপাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ আরও নাসরিন এবং বিজন স্যার জাকির স্যারের লোক।
গতবছর ডেপুটি কমিশনার জাকির হোসেন বেনাপোল কাস্টমসে জয়েন করার পর থেকে বেনাপোল চেকপেষ্টে দালাল মুক্ত করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেন। তার এ পদক্ষেপে অনেকে সাধুবাদ জানায়।কিন্তু পর মুহুর্তে তিনি সাংবাদিক প্রবেশ নিশেধাজ্ঞা করে। এতে তিনি সমালোচিত হয় সাংবাদিক প্রবেশ করতে না পারলে কাস্টমস এর ঘুষ নিতে সুবিধা হবে। এবং সেই ঘুষ আদায় করছে কাস্টম এর চেকপোষ্টে কর্তব্যরত কর্মকর্তা কর্মচারিরা। মানুষকে জিম্মি করে পাসপোর্ট যাত্রী হয়রানি করায় বেনাপোল দিয়ে যাত্রী যাতায়াত অনেক হৃাস পেয়েছে। নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র জানায় ভারত থেকে প্রতিদিন ভারতীয় নাগরিকরা মেয়াদর্ত্তীর্ন ভাজা, বিস্কুট, হরলিক্স, সোনপাপড়ি, বাদাম, আমসত্ব, আচার ও কসমেটিক্স দ্রব্য এনে বিক্রি করে থাকে। এছাড়া জুতা, স্যান্ডেল সহ ইমিটেশন পন্য আনছে। এর মুল সহোযোগিতায় রয়েছে এআরও বিজন ও আশিক। স্থানীয় একটি সুত্র জানায়, বেনাপোল চেকপোষ্টে একই পাসপোর্টযাত্রীদের চারবার ব্যাগ তল্লাশি করা হয়। এতে পাসপোর্টযাত্রীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। সাথে এ চেকপোষ্টের মর্যদাও ক্ষুন্ম হচ্ছে। প্রথমে কাস্টমস স্কানিংয়ে দেওয়ার পর ব্যাগ খোলে। এরপর ওই রুম থেকে বের হওয়ার পর দড়িয়ে থাকা শুল্ক গোয়েন্দা পরিচয় দানকারিরা ব্যাগ খোলে। সেখান থেকে বের হয়ে আসলে বিজিবির তাদের ব্যাগ খুলে আবার ক্যাম্প পাঠায়। এ ভাবে বার বার ব্যাগ খোলা মালামাল বের হওয়ায় পাসপোর্ট যাত্রীরা নাজেহা হয়ে পড়েছে।
সম্পাদকীয়,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৩৮/১, আরামবাগ,মতিঝিল-ঢাকা-১০০০
যোগাযোগ: মোবাইল ০১৭১৩-৩৩২১৫৯- ০১৩১৮-৬৮০৩৮১
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম