নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) প্রাক্তন মহাপরিচালক মালা খানকে প্রতিষ্ঠান থেকে বরখাস্ত এবং গবেষক মশিউর রহমানের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বিআরআইসিএমের কর্মরত বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিআরআইসিএমের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার লাবনী। তিনি বলেন,মালা খান একজন চিহ্নিত আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসর।ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি ব্যবহার করে বিআরআইসিএমের চিফ সায়েন্টিফি অফিসার পদে নিয়োগ পান। পরে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক পদটিও বাগিয়ে নেন।হয়ে ছিলেন বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান পরিষদের সভাপতি।তিনি ততকালীন আওয়ামী সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে দাপটের সঙ্গে শত কোটি টাকার প্রকল্প বাগিয়ে নিয়ে কোটি টাকা লুটপাট করেন।সম্প্রতি মালা খান গিরগিটির মত রঙ পাল্টিয়ে অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের পেছনে ছুটছেন।
আর তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাওয়া বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের হয়রানি করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২২ জানুয়ারি তার সঙ্গে আপসের প্রস্তাব নাকচ করায় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তুলে নেওয়া হয় মশিউর রহমানকে। প্রস্তাব দেওয়া হয় মালা খানের সঙ্গে বৈঠকের। কিন্তু রাজি না হওয়ায় মশিউর রহমানকে নিউ মার্কেট থানায় সোপর্দ করেন তারা। তখন গত ১৯ জুলাই বিসিএসআইআরের গাড়ি পোড়ানোর একটি মামলায় ১৬ নম্বর আসামি হিসেবে মশিউর রহমানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।অথচ ওই মামলার প্রকৃত আসামিরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে বিআরআইসিএমের সিনিয়র সাইন্টিস্ট অফিসার জাবেদ বিন আহমেদ বলেন, যেই মুহূর্তে আমরা এ সংবাদ সম্মেলন করছি ঠিক সেই মুহূর্তে আমাদের সহকর্মী ও ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর মালা খানের দুর্নীতি-অপকর্মের বিরুদ্ধে আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মশিউর রহমান মিথ্যা মামলার আসামি হিসেবে কারাবরণ করছেন। কিন্তু অবৈধ পিএইচডি ডিগ্রিধারী, দুর্নীতিপরায়ণ এবং গোপন আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠাতা মালা খান এখনও বহাল তবিয়তে। এমনকি গত ৫ আগস্টের পূর্বে যারা ছাত্র জনতার আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন, তাদের মামলা-হামলাসহ নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিআরআইসিএমে মালা খানের দুর্নীতি, জালিয়াতি, টেন্ডারবাজি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বক্তব্য দিয়েছিলেন বিআরআইসিএমের গবেষক মশিউর রহমান। যে কারণে মালা খানের প্রথম টার্গেট হয়েছেন তিনি। আজ আমরা যারা বক্তব্য দিচ্ছি তারাও হয়ত টার্গেটে পরিণত হয়ে মশিউর রহমানের মত হয়রারিমূলক মামলায় কারাবরণের শিকার হতে পারি। আমরা মনে করি মশিউর রহমানকে মামলায় জড়ানো ওসি মোহাম্মদ মহসিন উদ্দিনের সঙ্গে মালা খানের যোগসাজশ রয়েছে এবং বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মশিউর রহমানের গ্রেপ্তারের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমরা দ্রুততম সময়ে আমাদের সহকর্মী মশিউরের মুক্তি দাবি করছি। সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানানো হয়, মালা খানের বিরুদ্ধে সুষ্ঠ তদন্ত করে ১০ কর্মদিবসেরে মধ্যে বিনা ব্যর্থতায় সম্পন্ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে ও অভিযোগ প্রমাণীত হলে আইনানুগ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিআরআইসিএমের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুক্তার হোসেন, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেদোয়ানুল ইসলাম ও মশিউর রহমানের স্ত্রী নাসরিন বেগম প্রমুখ।