নিজস্ব প্রতিবেদক।। যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনয়নকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় রাজনীতি। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের প্রাথমিক মনোনয়ন পরিবর্তনের গুঞ্জনে উত্তাল হয়ে উঠেছে স্থানীয় রাজনীতি। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই কেশবপুরের সাধারণ ভোটার ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর নিজ জন্মভূমিতে ফিরে আসা তরুণ ও তুখোড় এই ছাত্রনেতাকে ঘিরে কেশবপুরে এক নতুন রাজনৈতিক আবহের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের মতে,শ্রাবণ এলাকায় ফেরার পর থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করে তুলেছেন। তারুণ্যদীপ্ত নেতৃত্ব আর মাঠপর্যায়ে সরাসরি সংযোগের কারণে তিনি স্বল্প সময়েই সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। তৃণমূলের একাধিক নেতাকর্মী জানান,কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ কেবল একজন নেতাই নন,তিনি এই অঞ্চলের পরিবর্তনের কারিগর। দীর্ঘ সময় পর আমরা একজন সাহসী ও ত্যাগী অভিভাবক পেয়েছি।
এখন যদি তার মনোনয়ন পরিবর্তনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তবে সেটি হবে কেশবপুরের মানুষের আবেগের ওপর চরম আঘাত। এছাড়া স্থানীয়দের দাবি,দীর্ঘ ১৬ বছরের লড়াই-সংগ্রামের পরীক্ষিত নেতা শ্রাবণকে বাদ দিলে কেশবপুরে বিএনপির সাংগঠনিক ভিত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। রাজপথের নেতার জন্য তৃণমূলের আকুতি দীর্ঘ দেড় দশক পর নিজ জন্মভূমিতে ফিরে আসা এই তরুণ নেতার আগমনে কেশবপুরে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে,তা গত কয়েক বছরের মধ্যে নজিরবিহীন। এছাড়াও স্থানীয়দের মতে,শ্রাবণ কেবল একজন কেন্দ্রীয় নেতাই নন,বরং তিনি কেশবপুরের মাটির সন্তান যিনি রাজপথ থেকে উঠে এসেছেন। বিগত সরকারের আমলে অসংখ্য হামলা,মামলা ও জুলুম সহ্য করেও দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা এখন তুঙ্গে।
ক্ষুব্ধ তৃণমূল ও সাধারণ ভোটার: সরেজমিনে দেখা গেছে, মনোনয়ন পরিবর্তনের ইঙ্গিতে ক্ষোভ কেবল বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই; সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। স্থানীয় ভোটারদের আশঙ্কা,রাজপথের পরীক্ষিত এই নেতাকে বাদ দেওয়া হলে কেশবপুরে বিএনপির শক্ত অবস্থানে বড় ধরনের ধস নামতে পারে।
স্থানীয়দের প্রধান তিনটি শঙ্কা হলো: নেতৃত্বে শূন্যতা: দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর শ্রাবণ যে ঐক্য তৈরি করেছেন,তা বাধাগ্রস্ত হবে। ভোটের সমীকরণ: নতুন কোনো মুখ এলে সাধারণ ভোটারদের মাঝে গ্রহণযোগ্যতা পেতে সময় লাগবে,যা নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তৃণমূলের নিষ্ক্রিয়তা: পছন্দের প্রার্থী বাদ পড়লে কর্মীরা ভোটের মাঠে উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারেন।
বিস্ফোরণের মুখে স্থানীয় রাজনীতি: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই গুঞ্জনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন কয়েক হাজার সমর্থক। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কেশবপুরের রাজনৈতিক সমীকরণে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ এখন একটি অবিচ্ছেদ্য নাম। হাইকমান্ড যদি জনমতের তোয়াক্কা না করে কোনো পরিবর্তন আনে, তবে আসন্ন নির্বাচনে এর বড় মাশুল গুনতে হতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এখনো পর্যন্ত দলীয়ভাবে চূড়ান্ত কোনো ঘোষণা না আসলেও, কেশবপুরের রাজপথের উত্তাপ জানান দিচ্ছে-তৃণমূল তাদের প্রিয় নেতাকে ছাড়া অন্য কিছু ভাবছে না।
কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মশিয়ার রহমান বলেন “শ্রাবণ ভাই দুঃসময়ে রাজপথে ছিলেন। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেওয়া মানে তৃণমূলের আবেগ নিয়ে খেলা করা। আমরা কোনো ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ বা অপরিচিত মুখকে মেনে নেব না।”ক্ষোভের মুখে সাংগঠনিক স্থিতিশীলতা তৃণমূল নেতাকর্মীদের আশঙ্কা,যদি কোনো কারণে শ্রাবণের মনোনয়ন পরিবর্তন করা হয়,তবে দলের চেইন অফ কমান্ড ভেঙে পড়তে পারে। এছাড়া কেশবপুরের প্রতিটি প্রান্তে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে যে উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে,তাতে বড় ধরনের ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
পরীক্ষিত নেতৃত্ব রাজপথের লড়াইয়ে শ্রাবণের ত্যাগ ও নেতৃত্ব সীমাহীন তিনি দীর্ঘ ১৬ বছর পর এলাকায় ফিরে সাধারণ মানুষের সাথে নিবিড় সংযোগ। নেতিবাচক প্রভাব অপরিচিত কাউকে মনোনয়ন দিলে ভোটের মাঠে ভরাডুবির আশঙ্কা। ভোটারদের হুঁশিয়ারি নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন মোড়ে ও চায়ের দোকানে এখন একটাই আলোচনা-শ্রাবণের মনোনয়ন। সাধারণ ভোটাররা স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন,রাজপথের লড়াকু সৈনিক কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকেই তারা চূড়ান্ত তালিকায় দেখতে চান। অন্যথায়,কেন্দ্রের যেকোনো বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ জানাবে। তৃণমূলের দাবি এখন একটাই-ষড়যন্ত্র নয়,ত্যাগের মূল্যায়ন করে শ্রাবণকেই ধানের শীষের চূড়ান্ত কাণ্ডারি করা হোক।
এবিডি.কম/জাহাঙ্গীর আলম রাজু