হুমায়ুন কবির ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি।। ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ রায় ওই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বেদড়ক মারপিট করেছেন। অসুস্থবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গত সোমবার ১১ মার্চ পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস চলাকালীন এ ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীর শারীরিক আঘাতের পাশাপাশি মুখে ও ঠোঁটে ক্ষত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা চিকিৎসক ফিরোজ আলম বলেন, শিশু শিক্ষার্থী তাহসিনের মুখের থুতনি ও ঠোটেঁ আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ওই শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনির শিক্ষার্থী তাহসিন আলীসহ সকল শিক্ষার্থীকে রুমে এসে শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ দাড়াতে বলেন। শিক্ষার্থী তাহসিন বে-খেয়ালে দাঁড়াতে ভুলে যায় এসময় অতর্কিতভাবে ডাস্টার দিয়ে আঘাত করেন শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ ।
শিক্ষার্থী তাহসিন জানায়, তাকে ডাস্টার দিয়ে মারার পর সে চরম ভয় পায়। পরে ক্লাস শেষে বাড়ীতে ফিরলে মুখে ঠোট রক্তাক্ত চেহেরা দেখে পরিবারের লোকেরা তার কাছে জানতে চায়। কেন এমন হয়েছে? পরে সে তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। তাহসিনের চাচা মঞ্জুর আলম বলেন, তার ঠোঁটে ও মুখে রক্তাক্ত দেখে আমরা অবাক হয়েছি। তাকে এ কারণ জিজ্ঞেস করতেই সে কান্না শুরু করে দেয়। ঘটনার বিবরণ দিয়ে তাহসিনের চাচা বলেন, সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ রায় পঞ্চম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাশ নিতে এসে সকলকে দাঁড়াতে বলেন,কিন্তু তাহসিন তা খেয়াল না করায়, সে দাড়ায়নি। এ কারণে শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ তাকে প্রথমে পিঠে পরে মুখে ও ঠোটেঁ ডাস্টার দিয়ে আঘাত করেন।
এর আগেও সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথের এমন অনেক ঘটনার অভিযোগ উঠলেও তার বিরুদ্ধে কোন প্রযোজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় সে বেপোরায়া হয়ে উঠেছেন। তাই তিনি শিক্ষার্থীদের প্রায় এমন মারপিট করেন। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবী করেছেন তাহসিনের পরিবার। ওই শিক্ষকের বার বার এমন আচরণে অভিভাবক মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক ধীরেন্দ্র নাথ রায় মুঠোফোনে বলেন, এমন কোন ঘটনা তিনি ঘটনানি। যদি ঘটতো তাহলে তো বিদ্যালয়ের প্রধানরাসহ অন্যরা জানতো, অভিযোগ হতো। এই ঘটনাকে তিনি পূর্ব শুত্রুতার জেরে সাজানো বলে দাবী করেছেন। রাণীশংকৈল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক(ভারপ্রাপ্ত) ছেলিমা সিদ্দিকার বক্তব্য নিতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রাহিমউদ্দীন মুঠোফোনে বলেন,শিক্ষার্থীর শরীরে আঘাত করা যাবে না।
এমন পরিপত্র রয়েছে। তারপরেও কেউ যদি অহেতুক আঘাত করে তাহলে এটি ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।এবং তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন মর্মে জানান।
এবিডি.কম/শিরিন আলম
সম্পাদকীয়,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৩৮/১, আরামবাগ,মতিঝিল-ঢাকা-১০০০
যোগাযোগ: মোবাইল ০১৭১৩-৩৩২১৫৯- ০১৩১৮-৬৮০৩৮১
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম