আমাদেরবাংলাদেশে ডেস্কঃ এতদিন রেডিও আবিস্কারের দাবিদার ছিলেন আমেরিকান বিজ্ঞানী গুগলিয়েলমো মার্কনি। সম্প্রতি তার নাতনী পারসেশচে মার্কনী জগদীশ চন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকীতে "বসু ইন্সটিটিউট " এর আয়োজিত বক্তৃতায় এই সত্য উদ্ভাসিত করেন।১৯০১ সালে মার্কনী আটলান্টিকের ওপারে প্রথম বেতার সংকেত পাঠান ও পাল্টাসংকেত গ্রহন করেন। সেই থেকেই তিনি নিজেকে রেডিওর আবিস্কারক দাবী করেন।
আমরা অনেকেই জানিনা আজকের ওয়াই- ফাইয়ের আদি ও মুল প্রায়োগিক আবিস্কারক হলেন আমাদের জগদীশ চন্দ্র বসু। মুলত এই যন্ত্রটি হলো ডিটেক্টর বা কোহেরার যা ব্যবহার করে মার্কনী আটলান্টিকের ওপারে রেডিও সংকেত পাঠাতে সফল হয়েছিলেন। অথচ ১৮৯৯ সালে জগদীশ চন্দ্র বসু লন্ডনে এই বিষয় টি নিশ্চিত করেছিলেন এবং রয়্যাল সোসাইটিতে যে প্রবন্ধে এই বিষয়ে জানান দেন তা রহস্যজনকভাবে হারিয়ে যায়। সম্প্রতি ইতালির সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অধ্যাপক উম্বেরতো কলম্বো বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে সর্বসমক্ষে তুলে ধরেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্সটিটিউট অব ইলেকট্রনিক এন্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে যে মার্কনি যে ডিটেক্টর ব্যাবহার করেছেন তার আবিস্কারক জগদীশ বসু। এবং এই প্রতিষ্ঠান বসুকে রেডিও বিজ্ঞানের জনক বলে অভিহিত করেছেন।
মার্কনির নাতি বলেন, আমার পিতামহ যে ডিডেক্টর ব্যাবহার করে রেডিওর আবিস্কারক দাবি করেছেন তার মুল আবিস্কারক বাংলার বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু। আমার পিতামহ জগদীশ বসুর গ্রাহক যন্ত্র ব্যাবহার করেই আটলান্টিক পারের তরঙ্গ গ্রহন করেছেন। আমার দাদা আসলে নতুন কিছু আবিস্কার করেন নাই। তিনি খুব বড় বিজ্ঞানী ও ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন সফল ব্যাবসায়ী। তাই বেতার টেলিগ্রাফির বানিজ্যিক সম্ভাবনা তিনি আগে থেকেই অনুভব করতে পেরেছিলেন।
জগদীশ বসু আসলে অন্য রকমের মানুষ ছিলেন। যেই দুনিয়াতে লিওনার্দো ভিঞ্চির মত বহুমুখী প্রতিভাকে কেবল চিত্রকর বলে জানে, সেখানে জগদীশ বসুর পদার্থবিদ, উদ্ভিদবিদ পুরাতাত্ত্বিকবিদ,সাহিত্যিক ও চিত্রকলা বিশেষজ্ঞকে কেবল " বিজ্ঞানী" নামেই ডাকবে সেটাই স্বাভাবিক।জগদীশ চন্দ্র বসু যখন উদ্ভিদের প্রানের প্রমান দেন৷ ইউরোপীয় বিজ্ঞানীরা বাদামি নেটিভের এত বড় দাবি সহজে মানতে চাননি। ইংল্যান্ডে সাহেবরা সরাসরি তাঁর বিরোধিতা করলেন। তখন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ও সাহেবদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন জগদীশ বাবুর পক্ষে।
জগদীশ চন্দ্র বসু তাঁর শিক্ষা আর দর্শনের কারনে বিজ্ঞানের প্রতি ঋষিসুলভ আনন্দবোধের আকর্ষণ অনুভব করতেন। তাঁর কাছে বিজ্ঞান ছিল মানবকল্যানের উপায়।জগদীশ চন্দ্র বসুর প্রাপ্তির আর কিছু নাই আজ। তবুও তাঁর রেডিও আবিস্কার আজ বিশ্বের কাছে পরিস্কার আর আমরা বাঙালি হিসেবে ধন্য এমন মহামানব জন্মেছিলেন আমাদের এই বঙ্গে।
সম্পাদকীয়,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৩৮/১, আরামবাগ,মতিঝিল-ঢাকা-১০০০
যোগাযোগ: মোবাইল ০১৭১৩-৩৩২১৫৯- ০১৩১৮-৬৮০৩৮১
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম