আমাদেরবাংলাদেশ ডেস্ক।। বাংলা লোকসঙ্গীতের অন্যতম পুরোধা আব্দুর রহমান বয়াতি। ‘মন আমার দেহঘড়ি সন্ধান করি কোন মিস্তরি বানাইয়াছে’, ‘আমি ভুলি ভুলি মনে করি প্রাণে ধৈর্য্য মানে না’, ‘আমার মাটির ঘরে ইঁদুর ঢুকেছে’, ‘মরণেরই কথা কেন স্মরণ কর না’, ‘মা আমেনার কোলে ফুটল ফুল’ সহ অনেক জনপ্রিয় ও হিট গানের শিল্পী বাউল সম্রাট আবদুর রহমান বয়াতীর মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, চীন, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানসহ বিশ্বের প্রায় ৩২টি দেশে ভ্রমণ করে বাংলার লোকসঙ্গীতকে অবাঙালি বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত করিয়েছিলেন এই লোকসঙ্গীত শিল্পী। তার সঙ্গীত জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো: জর্জ বুশের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে লোকসঙ্গীত পরিবেশ করা। এছাড়া তিনি দেশের লোকসঙ্গীত শিল্পীদল নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
আব্দুর রহমান বয়াতী বাংলাদেশের একজন প্রসিদ্ধ লোকসঙ্গীত শিল্পী। তিনি একাধারে অসংখ্য জনপ্রিয় লোকগানের শিল্পী, গীতিকার, সুরকার এবং সংগীত পরিচালক৷ ১৯৩৯ সালে ব্রিটিশ ভারতের ঢাকার সূত্রাপুর থানার দয়াগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন আবদুর রহমান বয়াতী-এ পর্যন্ত তার প্রায় পাঁচশ একক গানের অ্যালবাম বের হয়েছে। পাশাপাশি তিনটি মিশ্র অ্যালবামে গান গেয়েছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘মন আমার দেহঘড়ি সন্ধান করি কোন মিস্তরি বানাইয়াছে’, ‘আমি ভুলি ভুলি মনে করি প্রাণে ধৈর্য্য মানে না’ প্রভৃতি।
এক নজরে আব্দুর রহমান বয়াতি কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
পুরো নাম: আব্দুর রহমান বয়াতি
পারিবারিক ডাকনাম: বয়াতি
পারিবারিক তথ্য: স্ত্রী, ৩ পুত্র ও ৩ কন্যা
পিতা ও মাতা: মরহুম তোতা মিয়া ও মরিয়ম বেগম
জন্ম ও মৃত্যু: ১৯৩৯ (দয়াগঞ্জ, সূত্রাপুর, ঢাকা) – ১৯ অগাস্ট ২০১৩ (ঢাকা, জাপান বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল)
গায়ক জীবনের শুরু: ১৯৫৬
দলের নাম: আব্দুর রহমান বয়াতি দল (১৯৮২)
সঙ্গীতের প্রেরণা: প্রকৃতি ও মা
সঙ্গীত গুরু: কবি আলাউদ্দিন বয়াতি (কবি আলাউদ্দিন)। তিনিই ‘দেহঘড়ি’ গানটির গীতিকার।
অডিও এলবামের সংখ্যা: ৫০০
পুরস্কার: রাষ্ট্রপতি পুরস্কারসহ ৬টি জাতীয় পুরুস্কার
উল্লেখযোগ্য ঘটনা: যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে গান গাওয়া
বিশেষ এলবাম: ফিডব্যাক-এর ‘দেহঘড়ি’ (১৯৯৫) এলবামে তার দেহঘড়ির গানটি ফিউশন হয়
উল্লেখযোগ্য গানগুলো: ‘মন আমার দেহ ঘড়ি সন্ধান করি কোন মিস্তরি বানাইয়াছে’, ‘এই পৃথিবী যেমন আছে, তেমনি পড়ে রবে, সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে’, ‘দিন গেলে আর দিন পাবি না’
সঙ্গীত প্রচারের মাধ্যম: প্রধানত তিনি মঞ্চ শিল্পী। তাছাড়া বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং প্রাইভেট টিভি চ্যানেলে তিনি সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। ‘অসতী’ (১৯৮৯) নামে হাফিজুদ্দিন পরিচালিত একটি সিনেমাতেও তিনি গান গেয়েছেন।
মাটি ও মানুষের গানের পুরোধা আব্দুর রহমান বয়াতির প্রতি রইলো নিউজজি এর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
(আমাদেরবাংলাদেশ.কম/রিফাত)