শার্শা প্রতিনিধি।। শার্শায় ফসলি জমি সহ বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি কেটে একাধিক ইট ভাটায় বিক্রি করছে ভূমি খেকোরা। আর এ কাজে জড়িয়ে আছে উপজেলার কিছু বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্য সহ প্রভাবশালীরা। তবে এসব মাটি খেকোরা বিভিন্ন দপ্তরে আর্থিক সুবিধা দিয়ে এ কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে,শার্শা উপজেলার সোনাতনকাটি লুতফার ও খাইরুল কন্টাক্টার গোগা ইউনিয়ানে ইছাপুর গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী সিয়াদ আলী ও গোগা বিলপাড়ার বুলবুল ওই সব গ্রামের মাঠ থেকে মাটি কেটে বিভিন্ন ইট ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। ৮-১০টি ট্রাক্টরে করে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত মাটি উত্তোলন করছে ভূমি খেকোরা।
প্রভাবশালী সহ ইউপি সদস্যরা ভূমি থেকে মাটি কেটে ফয়দা লুটছে বলে ভয়ে কেউ মুখ খুলে সাহস পাচ্ছেনা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে মাটি বহনকারী একটি ট্রাক্টরের চালক বলেন,লুতফার,কায়রুল সিয়াদ আলী,বুলবুল সহ আরও বেশ কয়েকজন কন্ট্রাকটর জমির মালিদেরকে বিভিন্ন প্রলোভনে ফেলে মাটি বিক্রি করতে উৎসাহ করে।ফলে এসব জমির মালিকরা নির্ভয়ে দিনে ও রাতের আঁধারে সমান ভাবে মাটি কেটে অর্থ উপার্জন করছে।
সনাতনকাটি গ্রামের একাধিক সাধারণ মানুষেররা জানান,শীতের শুরু থেকেই রাতে আধারে মাটি কাটা জোর দিয়েছে মাটি খেকো সার্থলোভীরা। দীর্ঘদিন ধরে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের জন্য রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না। রাস্তার পাশে বিভিন্ন ফসল ধুলাবালিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বাসা বাড়িতে বসবাস করা যাচ্ছে না। মাটি কাটা এলাকার চাষিরা জানান,মাটি কাটা বন্ধ না হলে একদিকে যেমন কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের জন্য এসব সড়ক দিয়ে চলাচল দূরহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভয়াবহ ধুলার কারনে স্বাস্থ্যের উপরও ব্যাপক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া গোগা ইছাপুর গ্রামের সিয়াদ আলী বলেন, লেখালেখির কি দরকার, সবাইকে ম্যানেজ করে রাতে মাটি কাটা হয়। সনাতনকাটি গ্রামের লুৎফার বলেন,মাটি কেটে ভাটায় না দিলে ইট কোথা থেকে পাবেন। তাছাড়া মাটি কাটার সাথে ইউপি সদস্যরা জড়িয়ে রয়েছে তাদেরকে আগে বন্ধ করতে বলেন।
উক্তি বিষয়ে শার্শা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা ইসলামের কাছে জানতে চাইলে আমাদেরবাংলাদেশ ডটকমের প্রতিবেদক-কে বলেন,এভাবে মাটি কেটে বিক্রয় ও স্থানন্তরের কোন সুযোগ নেই। পাশাপাশি জনভোগান্তি হয় এমন কাজ করতে দেওয়া হবেনা। এ বিষয়ে তদন্ত করে শীঘ্রই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসাথে মিডিয়াকর্মী ও এলাকার সচেতন মহলকে আরো সচেতন হওয়ার আহবান জানান ভূমি অফিসার ফারজানা ইসলাম।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এক টুকরো জমিকেও গুরুত্বের দেখতে বলেছেন দেশ নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অথচ শার্শা উপজেলার ভূমি খেকোরা ফসলি জমি গ্রাস করতে যেন মহাউৎসবে লিপ্ত হয়েছে। উল্লেখিত স্থান ছাড়াও উত্তর শার্শার নিজামপুর,গোড়পাড়া,পাকশিয়া, কাশিপুর,চটকাপোতা,রুদ্রপুর,হাড়িখালী,বাগআঁচড়া সহ বিভিন্ন স্থানে মাটি কাটার উৎসবে লিপ্ত হয়েছে ভূমিদস্যু ও মাটি খেকোরা। এদের হাত থেকে পরিত্রান পেতে সরাসরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
আমাদেরবাংলাদেশ.কম/শিরিন আলম