আমাদেরবাংলাদেশ :আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আরও শক্তভাবে মাঠে ফিরে আসার আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। মঙ্গলবার আইসিসির শাস্তি ঘোষণার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তার ভালো এবং খারাপ সময়ে যেভাবে ক্রিকেট ভক্ত, দেশের মানুষ, বিসিবি ও সরকার পাশে থেকেছে এখনো যদি সেভাবে সমর্থন দিয়ে যায় তাহলে শিগগিরই আরও শক্তভাবে তিনি ক্রিকেটে ফিরে আসবেন।
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালা তিনবার লঙ্ঘন করার দায়ে এক বছর মাঠের বাইরে থাকার যে শাস্তি সাকিব পেয়েছেন তা তিনি মাথা পেতে নিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘যে খেলাকে আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি সেই খেলা থেকে নিষেধাজ্ঞা পেয়ে আমি দুঃখিত। তবে অনৈতিক প্রস্তাবের ব্যাপারটি আইসিসির আকসুকে না জানানোই যে শাস্তি দেয়া হয়েছে তা আমি মাথা পেতে নিচ্ছি।’
ক্রিকেটকে দুর্নীতিমুক্ত করতে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট আকসু ক্রিকেটারদের সহযোগিতার ওপর সবচেয়ে বেশি ভরসা করে জানিয়ে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার বলেন, এ ক্ষেত্রে তিনি দায়িত্ব পুরোপুরিভাবে পালন করতে পারেননি।শত কোটি ভক্ত ও অন্য খেলোয়াড়দের মতো আমিও চাই ক্রিকেট থাকুক দুর্নীতিমুক্ত। তাছাড়া, আগামীর তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা যেন আমরা মতো ভুল না করে সে জন্য আইসিসির আকসুর দুর্নীতি বিষয়ক শিক্ষামূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাব,’ যোগ করেন তিনি।
এদিকে, বিসিবি থেকে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থার সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, সাকিবের মতো একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় তিনবার দুর্নীতির প্রস্তাব পাওয়ার ঘটনা কর্তৃপক্ষকে জানাতে ব্যর্থ হওয়ায় বিসিবি হতবাক ও চরম হতাশ। তবে সেই সাথে সংস্থাটি আনন্দিত যে সাকিব আইসিসির আকসুর সাথে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন এবং তাদের শিক্ষা কর্মসূচির প্রতি তার সম্পৃক্ততার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
নিষেধাজ্ঞার পর সাকিব ভালো ও বিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে ফিরে আসবেন এবং বাংলাদেশকে আরও অনেক বছর সেবা দেবেন জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাকিবের ক্রিকেটে ফিরে আসার জন্য নিষেধাজ্ঞার সময়ে বিসিবি তাকে সহযোগিতা দেয়া বজায় রাখবে। বিসিবি আইসিসির সিদ্ধান্তকে সম্মান করে এবং ক্রিকেটে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একই মনোভাব পোষণ করে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন রাখায় সাকিবকে মঙ্গলবার দুই বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করে আইসিসি। তবে তিনি নিজের দোষ স্বীকার করে আইসিসির সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ায় নিষেধাজ্ঞার একটি বছর আবার স্থগিতও করা হয়েছে। সেই হিসেবে এক বছর পর ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে খেলায় ফিরতে পারবেন তিনি।
আইসিসির আকসু মূলত তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে এ শাস্তি দেয়। তিন অভিযোগের প্রত্যেকটি ঘটনা ২০১৮ সালের। তার মধ্যে দুটি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজ (বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে) চলাকালে এবং অপরটি আইপিএলে সান রাইজেস হায়দ্রাবাদ ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের মধ্যকার ম্যাচের ঘটনা।
সাকিবের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কোনো প্রমাণ পায়নি আইসসি। তবে জুয়াড়িরা ম্যাচ ফিক্সিংয়ের ব্যাপারে তিনবার সাকিবের সাথে যোগযোগ করলেও তিনি একবারও আইসিসিকে বিষয়গুলো জানাননি। যা আইসিসির নিয়মে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইসিসির নিয়ম হলো- কারও কাছ থেকে অনৈতিক কোনো প্রস্তাব পেলে যত দ্রুত সম্ভব আইসিসি বা সংশ্লিষ্ট দেশের ক্রিকেট বোর্ডকে জানাতে হবে। প্রতিটি সিরিজের আগে ক্রিকেটারদের এ নিয়মটি আনুষ্ঠানিকভাবে মনে করিয়েও দেয়া হয়ে থাকে। যা ভঙ্গ করলে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়। (সূত্র ইউএনবি)
সম্পাদকীয়,বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ৩৮/১, আরামবাগ,মতিঝিল-ঢাকা-১০০০
যোগাযোগ: মোবাইল ০১৭১৩-৩৩২১৫৯- ০১৩১৮-৬৮০৩৮১
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম