মোঃ শহিদুল ইসলাম সাগর সাভার: সাভার পৌর এলাকার চাপাইন সড়কের দীর্ঘদিন থেকে বেহালদশায় জনদুর্ভোগ চরমে পৌছেছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় জলাবন্ধতার সৃষ্টি হয়ে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীরা ও শিল্প কারখানার শ্রমিকসহ জনসাধারনের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটির অধিকাংশ জায়গায় বড় বড় গর্ত থাকায় অহরহ দূর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়াও সড়কটিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
এটি দুর্ভোগের অন্যতম কারন হিসেবেই দেখছে স্থানীয়রা। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সাভার বাসস্ট্যান্ডের সাভার নিউ মার্কেট থেকে শুরু হয়ে চাপাইন সড়কটির দুই পাশে বেশ কিছু স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দিনের পর দিন এই গুরুত্বপূর্ন সংযোগ সড়কটির বেহাল দশায় ছাত্র/ছাত্রীসহ অফিসগামী সকলের যাতায়াতে বিঘ্ন ঘটছে। বর্ষা মৌসুমে কাঁদা পানি আর শুস্ক মৌসুমে ধুলার কারনে অনেকের এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ব্যবহারে অনীহা রয়েছে।
এছাড়াও সাভার বাসস্ট্যান্ড হয়ে এ সড়কটি দিয়ে যেতে হয় পার্শ্ববর্তী এলাকার খাগানে অবস্থিত ড্যাফডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইউনিভার্সিটিসহ বেশ কয়েকটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মূল ক্যাম্পাসে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে কোন ধরনের যানজটের সৃষ্টি হলে অনেকে চাপাইন সড়কটি ব্যবহার করেন।
কারন এ সড়ক দিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকার মীরপুর, আবদুল্লাহপুর, বিমানবন্দরে পৌছা যায়। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সড়কটির দুই পাশে ও মেঝেতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সড়কটি একেবারেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টি হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র/ছাত্রীদের স্কুল-কলেজে আসা বন্ধ হয়ে যায়। কারন ওই সময় সড়কটিতে পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা না থাকায় হাটু পানি পর্যন্ত জমে থাকতে দেখা যায়। সাভার বাসস্ট্যান্ড থেকে আশপাশের এলাকার রিকশা ভাড়া ১০ টাকা আর অটোরিকশা ভাড়া ৫ টাকা থাকলেও সড়কটিতে অসংখ্য গর্ত থাকায় যাত্রীদের কয়েক গুন বেশী ভাড়া গুনতে হয়।
অনেক ক্ষেত্রে বেশী ভাড়া দিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও ডগরমোড়া, চাপাইন এলাকার কথা শুনলে রিকশা বা অটোরিকশা যেতে চায় না। এ ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে তাদের পায়ে হেটে যেতে হয়।এ সংযোগ সড়কটির সবচেয়ে বেশী খারাপ অবস্থা সাভার নিউ মার্কেট থেকে চাপাইন ব্রিজ পর্যন্ত। এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে এমন কিছু গর্ত রয়েছে যাতে অহরহ গাড়ীর চাকা পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকে। অসংখ্য খানাখন্দ হওয়ায় যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। ব্যস্ততম সড়কটি মেরামত বা সংস্কার না করায় এটি মৃত্যূকূপে পরিনত হয়েছে।
তাই জনসাধারণের মাঝে ক্ষোভের অন্ত নেই। হাজার হাজার মানুষের সাথে সবচেয়ে বেশী বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের। অপরদিকে শিল্পাঞ্চল সাভারের অনেক গার্মেন্টস কর্মীর এ এলাকায় বাসস্থান হওয়ায় তাদের কর্মস্থলে যেতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।কলেজ ছাত্র রাফি জানান, চাপাইন সড়কটির বেহালদশার কারনে বৃষ্টি হলে কলেজে হেটে আসার সময় প্যান্টসহ জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। আবার অনেক সময় রিকশাও আসতে চায় না। আর আসলেও ভাড়া বেশী দিতে হয়। প্রতিদিন সময় মতো ক্লাশে উপস্থিত হতে পারি না।
চাপাইন থেকে ৭নং ওয়ার্ডের ডগরমোড়ার সংযোগ সড়কটির অবস্থাও বেহালদশা। নাহার ইলেকট্রনিক্স মোড় থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাথে যুক্ত হওয়া সড়কটিতে ১০ মিনিট বৃষ্টি হলেই বাসা থেকে বের হওয়া যায় না। এ এলাকায় বাড়ী করে যারা বসবাস করছেন, তারা না পারেন চলে যেতে, আর না পারছেন থাকতে। বাড়ীর মালিকদের মাসের পর মাস বাসা খালী যাচ্ছে, বাসা ভাড়া হচ্ছে না। যদিও তারা পৌরসভাকে নিয়মিত পৌর কর দিয়ে আসছেন। মহল্লার ড্রেন গুলো থেকে পানি সরছে না। পৌর কঞ্জারভেন্সী ইন্সপেক্টরকে বিষয়টি জানালেও ব্যস্ততা দিখিয়ে গাড়ী বা তার অধীনস্থদের পাঠাতে গড়ি মসি করেন।
আসলেও নিয়ম বহির্ভুত তাদের টাকা দিতেই হবে। পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট এলাকার মুরব্বিরা বারবার গিয়ে মহল্লাবাসীর স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয় নি। শুধু আশ্বাস দিয়ে আসছেন দ্রুত কাজ ধরা হবে। কঞ্জারভেন্সী ইন্সপেক্টর রিয়াজুল ইসলাম জানান, ড্রেন এবং ময়লা পরিস্কার করার জন্য আমাদের জনবল কম থাকায় অনেক সময় আমরা সময় মতো লোক পাঠাতে পারি না। আর ময়লা পরিস্কার করার ক্ষেত্রে পৌর কর্মচারীদের টাকা দেয়ার কোন নিয়ম নেই। তাদের পৌর সভা থেকে মাসিক বেতন দেয়া হয়।সাভারের চাপাইন সড়ক ও ডগরমোড়া সংযোগ সড়কের বেহালদশা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফুল ইমাম জানান,
ডিসেম্বরের মধ্যে টেন্ডার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আশা রাখি আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে কাজ সম্পূর্ণ হলে এখনকার মতো সবাইকে আর কষ্ট করতে নাও হতে পারে। তিনি আরো জানান- চাপাইন সড়কটি সাভার নিউ মার্কেট এলাকা থেকে শুরু করে কলমা পর্যন্ত ৫ কিঃ মিঃ যা এশিয়ান ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট আর ডগরমোড়া সংযোগ সড়কটি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক করবে। এব্যাপারে সাভার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল গণি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের আগে এর কাজ ধরা সম্ভব না। আশা রাখি ডিসেম্বরের পরে কাজ শুরু হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ জাহাঙ্গীর আলম রাজু
হেড অফিস : প্রস্তাবিত (১ম তলা),৯৮, নয়াপল্টন,ঢাকা-১০০০
বানিজ্যিক এলাকা: বাইপাইল আশুলিয়া,সাভার,ঢাকা।
মফস্বল কার্যালয়: মেইন রোড (২য় তলা),কেশবপুর,যশোর।
নিউজ-মেইল: dailyamaderbd24@gmail.com
নিউজ রুমঃ রাজু:- ০১৭১১-১৩৯৪২০
আমাদেরবাংলাদেশ. ডট কম