জাহাঙ্গীর আলম রাজুঃ
ঢাকা সাভারে মাদক প্রতিরোধে পুলিশের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাসের উদ্যোগে সাভার থানা মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সাভার, ধামরাই, ঢাকা জেলা ডিবি পুলিশ সদস্যগণসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।
কারিতাসের কর্মসূচী কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ খানের সঞ্চালনায় সভায় সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম সায়েদ, ডিবি ঢাকা জেলা উত্তরের ওসি আবুল বাশার, সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সওগাতুল আলম, পুলিশ পরিদর্শক (ইন্টিলিজেন্ট) এমারত হোসেন, সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস রোকেয়া হকসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
সভার শুরুতেই মাদক প্রতিরোধে কারিতাস প্রচেষ্টা প্রকল্পের কার্যক্রমসমূহ স্লাইট প্রদর্শনের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
সভায় সাভার মডেল থানার ওসি এ এফ এম সায়েদ বলেন, মাদক ব্যবসায়িরা দেশ ও জাতির এক নম্বর শত্রু। তাদের সাথে যেন কেহ আত্মীয়তা না করেন। মাদকসেবীদের বুঝিয়ে কমপক্ষে ৬ মাস মাদক নিরাময় কেন্দ্রে রাখতে হবে। তিনি স্মৃতি চারণ করে বলেন, তার পূর্বের কর্মস্থল ঢাকা জেলা উত্তর ডিবির ওসি থাকাকালে শতাধিক ব্যক্তিকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করিয়েছেন। ডিএমপিতে থাকাকালে তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন যে ব্যক্তি মাদক সেবন করতে নিয়মিত পাজারো গাড়ী নিয়ে আগার গাও বিএনপি বস্তিতে আসতেন তার সেখানেই মৃত্যু হয়েছে। বর্তমান সরকার এ বিষয়ে জিরো টলারেন্সে অবস্থান করছে। মাদকের মূল কেন্দ্র টেকনাফে মাদক ব্যবসায়িদের চালচুলা তছনছ করে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাদকের কারণে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। মাদকসেবী কোন কোন ক্ষেত্রে হতাশ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। তিনি জানান, সাভার মডেল থানায় যোগদানের পর অদ্যাবধি ২১ জন আত্মহত্যাকারির নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে।
ঢাকা জেলা উত্তর ডিবির ওসি আবুল বাশার বলেন, মাদক ব্যবসায়ি ও সেবনকারী কাউকেই ছাড় দেয়া হয় না। সম্প্রতি এক পুলিশ কর্মকর্তার ভাইকে ফেনসিডিলসহ ধরেও ছাড় দেয়া হয়নি। কারণ তার অপরাধ ছাড় দেয়ার মতো নয়। এ জন্য তিনি পরিবারের তরুণ সদস্য কোথায় যাচ্ছে তার চালচলন খেয়াল রাখার জন্য পরিবারের কর্তা ব্যক্তিদের নজর রাখার অনুরোধ জানান।
ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সওগাতুল আলম বলেন, মাদক সমাজ উন্নয়নের বড় বাধা। প্রতিদিন অন্য আসামী না থাকলেও ঘুম থেকে জেগে থানা হাজতে ৪/৫ জন মাদক সংক্রান্ত আসামী থানার হাজতে দেখা যায়।
ইন্সপেক্টর (ইন্টিলিজেন্ট) এমারত হোসেন বলেন, মাদক দেশ ও জাতির উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করছে। তাদেরকে প্রতিরোধ করা সময়ের দাবি।
সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক বলেন, কারিতাস তাদের প্রচেষ্টা প্রকল্পের মাধ্যমে মাদকাসক্তি প্রতিরোধে কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সমাজে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করলে মাদক সমাজ থেকে অনেকাংশ কমে যাবে।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে কথাকলি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অতিথিগণ ঝড়ে পড়া এক এতিম স্কুল শিক্ষার্থীকে সেলাই মেশিন ক্রয় করার জন্য ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এ সময় ওই শিক্ষার্থীর মা উপস্থিত ছিলেন।