আবা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রবল আপত্তির মুখে শেষ মুহূর্তে অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে দু’সপ্তাহের জন্য পিছু হটলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার নির্দেশ ছিল, যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের এবার সপরিবার ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে বের করে দেয়া হবে।
কিন্তু হঠাৎ করেই প্রায় শেষ সময়ে প্রেসিডেন্ট নিজেই সেই সিদ্ধান্ত আপাতত দু’সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করলেন । টুইটারে ট্রাম্প জানান, বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের ‘অনুরোধের কারণেই মূলত তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । তিনি বলেন, ‘‘দক্ষিণ সীমান্তে নিরাপত্তা এবং শরণার্থীদের আশ্রয়, অধিকার ইত্যাদি নিয়ে যে সব জটিলতা আছে, আশা করব ডোমোক্র্যাট-রিপাবলিকানরা তা দু’সপ্তাহের মধ্যেই আলোচনায় মিটিয়ে ফেলবেন।’’ তা না হলে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন দু সপ্তাহ পর অবশ্যই এই অভিযান শুরু হবে এবং তখন কারও অনুরোধ রাখা হবে না।
আজ অবশ্য আইসিই-র অভিযান ঘোষণার পরেই এ নিয়ে সমালচনার ঝড় বয়ে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। বেঁকে বসেন দেশের অধিকাংশ শহরের মেয়ররা। এই বিষয়ে শিকাগোর মেয়র শহরের পুলিশকে স্পষ্ট বলে দেন, আইসিই-কে কোনও রকম সহযোগিতা করা হবে না। এই তল্লাশি অভিযানে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, সান ফ্রান্সিসকোর মেয়রেরাও। এই অবস্থায় হোমল্যাল্ড সিকিয়োরিটির সঙ্গে বিভিন্ন মার্কিন শহরের প্রশাসনিক স্তরে বড়সড় দ্বন্দ্বের আশঙ্কা করেছিলেন অনেকে। কিন্তু শেষমেশ ট্রাম্প নিজেই তা স্থগিত করায়, আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ ভাবে আমেরিকায় ঢুকেছেন বলে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অভিযোগ করে এসেছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর পরই ট্রাম্প ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়ায় অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতারের কারণে প্রচুর শিশু তাদের বাবা-মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ট্রাম্পের নীতি নিয়ে গোটা বিশ্বে সামলোচনার ঝড় ওঠে।
এ বার যাতে সেই রকম কিছু না ঘটে তার জন্য আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব কেভিন ম্যাকঅ্যালিনান। তিনি জানান, অবৈধ অভিবাসী পরিবারগুলোকে প্রথমে চিহ্নিত করে তাদের আগে হোটেলে রাখা হবে। শিশুরা যাতে তাদের মায়েদের থেকে আলাদা না হয়, বা পরিবারের কোনও সদস্য যাতে একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন না হয় সেজন্য এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
কেভিন আরও জানান, তাদের কাছে ১৫০টি শরণার্থী পরিবারের তালিকা রয়েছে, যারা প্রথমে আইনি সহায়তা পাচ্ছিল। কিন্তু মাঝপথে তারা অন্যত্র গা ঢাকা দিয়েছে। এই সব পরিবারের প্রত্যেককে আটক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটির উপরে।
আপাতত অভিযান স্থগিত রাখলেও, ট্রাম্প বলেন, ‘‘শিকাগোর মতো কিছু শহর এই অভিযান নিয়ে আপত্তি করছে বটে, কিন্তু এই সব শহরেই তো অপরাধের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। এবং সেটার একটা বড় কারণ অবৈধ অভিবাসীরা ।’’