মইনুল হোসেন প্লাবন, শেরপুর।। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ ‘প্যারালাইসিসে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন শেরপুরের হাফেজ মাওলানা নুরুল ইসলাম মাহমুদী’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে একটি হুইল চেয়ার পেয়েছেন প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে চলৎশক্তি হারিয়ে প্রায় ১ বছর যাবত চরম মানবেতর জীবন-যাপনকারী শেরপুরের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, শিশু বক্তাখ্যাত ওয়াজিনে কেরাম হাফেজ মাওলানা মোঃ নুরুল ইসলাম মাহমুদী (৫৫)।
গত ৬ এপ্রিল মঙ্গলবার ওই সংবাদটি প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সেইসাথে অনেকের মাঝে তা ব্যাপক সাড়া ফেলে। তার ব্যবহারে একটি হুইল চেয়ার কিনে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে যোগাযোগ করেন একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। ওই অবস্থায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অর্থ্যাৎ খবরটি প্রকাশের ৩/৪ ঘণ্টা না যেতেই শহরের তাতালপুর এলাকার অধিবাসী ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ইউসূফ আলী, স্ত্রী মুন্নী বেগম দম্পতি একটি হুইল চেয়ার উপহার নিয়ে শহরের দমদমাস্থ হাফেজ মাওলানা মোঃ নুরুল ইসলাম মাহমুদীর বাসায় ছুটে যান। এরপর অসুস্থ মাহমুদীর খোঁজ-খবর নিয়ে তাকে ওই হুইল চেয়ারে বসিয়ে দেন। একই সময় শহর থেকে তাদের সাথে যাওয়া সিনিয়র সাংবাদিক আবুল হাশিম তার হাতে তুলে দেন নগদ ১ হাজার টাকা। ওই সহায়তা প্রদানকালে মাহমুদীর একমাত্র সন্তান নুসরাত জাহান দিপ্তী, ছোট ভাইরা হাফেজ মাওলানা মোঃ আব্বাস আলী ও এই প্রতিবেদক উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, হাফেজ মাওলানা মোঃ নুরুল ইসলাম মাহমুদীর ওই খবরে আরও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় নারী উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী নার্গিস আক্তার মনখোস, নয়আনী বাজার এলাকার অধিবাসী, বিচার বিভাগের কর্মচারী আব্দুর রহিম পাপ্পু ও নবীনগর এলাকার তার শিক্ষার্থী, যুবলীগ নেতা বিপ্লবসহ আরও বেশ কয়েকজন।
উল্লেখ্য, প্রায় ১ বছর আগে হঠাৎ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (ব্রেইন স্ট্রোক) হলে তার শরীরের এক পাশ ডান পা, হাত ও চোখ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। সেই থেকে চিকিৎসা চালাতে গিয়ে আর্থিকভাবে পর্যুদস্ত হয়ে পড়লেও ফিরে আসেনি সুস্থতা। ফলে সহায়-সম্বল বলে থাকা নিজের একখন্ড ভিটেবাড়িতেই মানবেতর জীবন-যাপন কাটছে তার। স¤প্রতি সমাজসেবা বিভাগের আওতায় তার ভাগ্যে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড মিললেও কেবল তা দিয়েই চলছে না জীবন। সেবাযতœ, চিকিৎসা আর খাওয়া-দাওয়াসহ সব ক্ষেত্রেই রয়েছে ঘাটতি। আর ওই অবস্থায় সম্পূর্ণ মানবিক কারণে ওই অসহায় আলেম ব্যক্তির সহায়তায় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি বা বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।