নিজস্ব সংবাদদাতা।। প্রতি বছরের চেয়ে এবছর ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে বোরো চাষে বিপাকে পড়েছে কেশবপুরের কৃষকরা। একই সঙ্গে বেড়েছে সার কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি। উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় এবার বোরো আবাদ তুলতে পারবে কিনা সেটি নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে বাড়তি খরচ প্রায় ছয় হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানান কৃষকরা।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকালে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলার সময় একাধিক কৃষক বলেন,বোরো চাষে খরচ বাড়ছে, মৌসুম শেষে ধানের বাড়তি দাম না পেয়ে তাদের উৎপাদন খরচ উঠবে না। সরকারি সংগ্রহ অভিযানে ধান-চালের দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের দেউলি গ্রামের হাসেম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ মৌসুমে প্রায় চার বিঘা জমিতে বোরো আবাদ শুরু করেছি। তবে এবছর বোরো ধান চাষাবাদে খরচ অনেক বেশি হবে,গত বছর প্রতি বিঘা জমিতে পানি নিতে খরচ পড়তো চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা এবছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা। এছাড়াও সার কীটনাশক ও বীজের দাম ও বেড়েছে একই উপজেলার হাসান পুর গ্রামের আজিজুল হক বলেন দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন শুরু করেছি। তবে বোরো ধান চাষাবাদের জিনিসের দামের সঙ্গে শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে।
এছাড়া কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় গত বোরো মৌসুমী এক বিঘা বোরো উৎপাদনে খরচ ছিলো প্রায় ১৪ হাজার টাকা। আর এ বছর তা দাঁড়াবে প্রায় বিশ হাজার টাকা। গত বোরো মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে সেচের খরচ ছিল ৪ হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা এবছর সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা। প্রতি কেজি বীজ ছিল ২০০ টাকা এবার তা হয়েছে ৪০০ টাকা। এছাড়া সার খরচ দুই হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে চার হাজার টাকা।
একই সাথে কীটনাশক পাঁচশত টাকা থেকে বেড়ে বারোশত টাকা। ধান রোপনে মজুরি বীঘা প্রতি ছিলো তিন হাজার টাকা এবার সেটি দাঁড়িয়েছে সাড়ে চার হাজার টাকা। এছাড়া জমির আগাছা পরিষ্কার ও মাড়াই খরচ তো রয়েছেই। এছাড়া কেশবপুর সদর বায়সা গ্রামের শাহাজান বলেন বোরো ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে,তবে ডিজেল চালিতো সেচের খরচ এবার প্রতি কাঠা ৩০০ টাকার স্থলে দিতে হবে ৩৫০ টাকা। আর বিদ্যুৎ চালিত সেচের দাম প্রতি কাঠা ২৫০ টাকা থেকে দাঁড়িয়েছে ৩০০ টাকা এছাড়া অতি জিনিসের দাম তো বেড়েই গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় চলতি ইরি বোরো মৌসুমে ১৪ হাজার ৪ শত হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে। কৃষি অফিসার বলেন প্রান্তিক ও বর্গা চাষীদের প্রণোদনার যে ব্যবস্থা করা হয়েছে সেটা সামান্য। অনেকে ধার দেনা করে ধান চাষ করছেন। কিন্তু মৌসুম শেষে ধানের উপযুক্ত দাম পাচ্ছে কিনা অনিশ্চয়তা রয়েছে। এ জন্য সরকারি পদক্ষেপের প্রয়োজন। তিনি বলেন বোরো চাষে খরচ বেশি লাগে। কৃষকদের খরচ কমাতে পরিমিত সেচ এবং নিয়ম মেনে সার ও কীটনাশক ব্যবহারে মাঠ পর্যায় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এবিডি.কম/জাহাঙ্গীর