নিউজ ডেস্ক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের গ্রেফতারে পুলিশের কোনো গাফিলতি নেই। সে আত্মগোপনে থাকায় তাকে গ্রেফতারে দেরি হচ্ছে। যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন তিনি।’
ওসি মোয়াজ্জেমের গ্রেফতারে পুলিশের গাফিলতি আছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাকে গ্রেফতারে পুলিশের কোনো গাফিলতি নেই।’
এদিকে অভিযানের পঞ্চম দিনেও গ্রেফতার হয়নি ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকাসহ কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়েও মোয়াজ্জেমকে পাওয়া যায়নি। যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়েছিল।
এর আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওই মামলায় মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতারের পরোয়ানা গত বৃহস্পতিবার যশোরের কোতোয়ালিতে তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেছে।
মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আপত্তিকর প্রশ্ন করে এবং তা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানোর অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে ২৭ মে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। কিন্তু তাকে গ্রেফতার করা নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ ওঠে। এ অবস্থায় গত রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তাকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়েছে।
এদিকে মোয়াজ্জেম হোসেনের পালানো ঠেকাতে বেনাপোলসহ সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি আবুল বাশার বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর পুলিশ সদর দফতর থেকে জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে আমাদের কাছে তার পাসপোর্ট নাম্বার দেওয়া হয়েছে।
মোয়াজ্জেম যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য চেকপোস্টে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। যাতে তিনি এই ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে ভারতে যেতে না পারেন। ফেনীর বিলোনিয়া ইমিগ্রেশনের এসআই সুজাত আলী মাহমুদ জানান, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরই পুলিশের হেডকোয়ার্টার থেকে জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে আমাদের কাছে তার পাসপোর্ট নম্বর দেওয়া হয়েছে। আমরা নিশ্চিত করেছি যাতে তিনি এই ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে কোনোমতেই ভারতে পালাতে না পারেন।
ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় নুসরাতের গায়ে।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের ধরতে গড়িমসির অভিযোগ ওঠার পর ১০ এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনকে সোনাগাজী থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে বদলি করা হয়। ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। ওই মামলায় নুসরাতের জবানবন্দি নেওয়ার পর তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মামলা হয় ঢাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। ওই মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করেন।