আমাদেরবাংলাদেশ ডেস্কঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিনের পদত্যাগের দাবিতে মধ্যরাতে হল গেটে আন্দোলনে করেছে আবাসিক ছাত্রীরা। সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাত সোয়া ১০ টার দিকে হলগেটের সামনে এ আন্দোলন করে তারা।
আন্দোলনকারী সূত্রে, হল প্রভোস্টের খারাপ ব্যবহার, হুমকি, প্রভোস্টের স্বেচ্ছাচারিতা ও রাজনৈতিক হয়রানিসহ ১৫ টি দাবি নিয়ে বাধ্য হয়ে আন্দোলন করছেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা। রাত সোয়া ১০ টার দিকে হল গেটের সামনে অবস্থান নেয় তারা। এসময় প্রভোষ্টের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে তারা। একপর্যায়ে গেটে বসে অবস্থান নেয় ছাত্রীরা।
এসময় তাদের হাতে ‘অন্যায়ভাবে হয়রানি আর মানব না‘, ‘দায়িত্বে অবহেলা আর মানব না‘, ‘ভিসি স্যার আমরা এর সমাধান চাই‘, ‘স্বৈরাচারী প্রভোস্টের পতন চাই‘, ‘প্রভোস্টের অপসারণ চাই‘সহ নানা স্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন দেখা যায়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরের সাময়িক দ্বায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড.পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ আন্দোলন প্রত্যাহার করে হলে ফিরে যেতে ছাত্রীদের কাছে হাত জোড় করে অনুরোধ করেন। কিন্তু ছাত্রীরা উপাচার্য স্যার না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দেয়। ছাত্র উপদেষ্টা বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারীকে হল গেটে নিয়ে আসেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সাথে আলোচনায় বসেন। এসময় কোষাধ্যক্ষ ও ছাত্র উপদেষ্টাও উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনরত ছাত্রীদের অভিযোগ, প্রভোস্ট ম্যাম ছাত্রীদের সাথে দূর্ব্যাবহার করেন। তিনি আমাদের কোন কথায় শুনতে চান না। তিনি কথায় কথায় বলেন, হল কি তোমার বাবার? আমরা তার বিরদ্ধে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ করায় তিনি আমাদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া আমাদেরকে বিভাগের শিক্ষকদের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। জানা যায়, এর আগেও ১৮ টি অভিযোগ এনে গত ১ অক্টোবর উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় হলের ছাত্রীরা। এছাড়া হলে ছিট পেতে হলের ছাত্রলীগ নেত্রী প্রিয়াঙ্কা বোস রাখি কর্তৃক রাজনৈতিক হয়রানিরও স্বীকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও সাময়িক দ্বায়িত্বে থাকা প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ বলেন, ‘আমরা ছাত্রীদের সাথে কথা বলেছি। হল প্রভোস্টের আচার-আচারণ ছাত্রীদের প্রতিকূলে যাওয়ায় তারা এ বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রীদের সাথে কথা বলেছি। তারা প্রভোস্টের বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়েছি এবং আশ্বস্তের একপর্যায়ে তারা রুমে ফিরেছে। আমরা আজ (মঙ্গলবার) বিষয়টি নিয়ে বসে একটা সিদ্ধান্তে আসব আশা করছি।’