রাজশাহীর মোহনপুরে বখাটেদের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে নবম শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বর্ষা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর নিজ ঘরেই গলায় ফাঁস দেয় সে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি, অভিযুক্তরা যাতে কোনোভাবেই আইনের ফাঁক-ফোকরে পার না পায়।

নিজ বাড়ি থেকে স্কুল আঙিনা হয়ে স্কাউটিং…দুরন্তপনায় মাতিয়ে সবাইকে মাতিয়ে রাখতো কিশোরী সুমাইয়া আক্তার বর্ষা। একচালা টিনের সেই বাড়ি আজ কেবলই শুনশান নীরবতা। কান্না আর আহাজারিতে যেন ভারি হয়ে উঠেছে চারপাশ। এখন তার পরিবারে শুধুই হাহাকার।

ইফতারিতে মজা করে বড়া খাওয়ার জন্য নিজহাতেই ডাল ভিজিয়েছিল বর্ষা। দুপুরে মা ফরিদা বেগম গিয়েছিলেন বাড়ির বাইরে। ছিলেন না দিনমজুর বাবাও। রোজার তপ্ত দুপুরে ঘরে থাকা বড় দুই বোন চোখ বুজেছিল ঘুমে। এমন সময় পাশের ঘরে সবার অজান্তে গলায় ফাঁস দেয় বর্ষা। আত্মহত্যার আগে চিরকুটে লিখে গেছে, নিপীড়নের বিচার না পাওয়ার কথা। পরিবারের অভিযোগ, পাশের বাড়ির মুকুল নামে এক যুবক দীর্ঘদিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিল বর্ষাকে।

এরআগে, গেল ২৩ এপ্রিল বিকেলে বান্ধবী সোনিয়ার সঙ্গে প্রাইভেট পড়তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় বর্ষা। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। পরিবারের অভিযোগ, সহপাঠী সোনিয়ার সহযোগিতায় অপহরণের পর বর্ষার ওপর নির্যাতন চালিয়েছিল মুকুল। বখাটে মুকুলে বিরুদ্ধে আগেই অভিযোগ করেছিল বর্ষার পরিবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রক্ষা করা গেল না তাকে। এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে বর্ষা অপহরণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে মুকুলসহ ১৩জনের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা হয়েছে। মামলায় মুকুল এখন জেলহাজতে। তবে গ্রেফতারের কয়েকদিন পরই জামিনে মুক্ত সোনিয়া।