বিশেষ প্রতিনিধি।। সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডের প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো অধরা মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতারা। হত্যার বিচার ও সন্তানের ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ প্রধান উপদেষ্টা ও আইন উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের পরিবার।
শোকাহত স্ত্রী ফরিদা বেগম মুক্তা বলেন, আমার দুই সন্তান বাবাকে হারিয়েছে, কিন্তু আমরা চাই না তারা ন্যায়বিচার থেকেও বঞ্চিত হোক। এখনো যারা হত্যার ছক এঁকেছে, অর্থ জুগিয়েছে, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে। আমরা চাই, এই ষড়যন্ত্রের নেপথ্যের শক্তিগুলোওআ আইনের আওতায় আসুক।
ময়মনসিংহ জেলা এসপি, জিএমপি কমিশনার ও সিটি প্রশাসকের সহায়তা: মানবিক আশ্বাস গাজীপুর মহানগরের সাংবাদিক সমাজের পাশাপাশি তুহিনের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন ময়মনসিংহ জেলা এসপি আখতার উল আলম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার ড. মো. নাজমুল করিম খান এবং গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
এসব কর্মকর্তারা নিহত তুহিনের পরিবারের হাতে নগদ অর্থ সহায়তা তুলে দেন এবং ভবিষ্যতেও পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।ময়মনসিংহ জেলা এসপি আখতার উল আলম বলেন তুহিনের পরিবারকে মানবিক সাহায্য করেতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এতিম দুই শিশু তৌকির ও ফাহিমের পাশে থাকবো। সিটি প্রশাসক নগর ভবনের হলরুমে অনুষ্ঠিত দোয়া ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বলেন, এই দুই শিশুর চোখে তুহিনের স্বপ্ন। আমরা সেই স্বপ্নকে মরতে দেব না।
জিএমপি কমিশনার তুহিনের স্ত্রী’র হাতে অর্থ সহায়তা তুলে দিয়ে বলেন, “তুহিন ছিলেন সাহসী সাংবাদিক। আমরা তার পরিবারের পাশে আছি এবং বিচার প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো। তুহিনের পরিবার সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন।
৭ দফা দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা
তুহিনের স্ত্রী ফরিদা বেগম মুক্তা জানান,তারা শিগগিরই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ৭ দফা দাবি তুলে ধরবেন। দাবিগুলো হলো-
১. হত্যার দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা।
২. নেপথ্যের নির্দেশদাতা ও অর্থদাতাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা।
৩. দুই সন্তানের শিক্ষা, নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ গঠনে রাষ্ট্রীয় সহায়তা।
৪. পরিবারের ক্ষতিপূরণ প্রদান।
৫. হুমকি-মুক্ত জীবন নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
৬. তদন্তে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা।
৭. সাংবাদিক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নে পদক্ষেপ।
গ্রেফতার ৯, কিন্তু মূল হোতা এখনো বাইরে উল্লেখ করে মুক্তা বলেন,হত্যায় জড়িত সন্দেহে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলেন-মিজান ওরফে কোপা মিজান,তার স্ত্রী গোলাপি, মো. স্বাধীন,আল-আমিন, শাহজালাল,ফয়সাল হাসান, সুমন, শহিদুল্লাহ ও আরমান।তবে তাদের কেউই পরিকল্পনার হোতা নয় বলে তদন্ত কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন। শেষ কথা: তুহিন নেই,কিন্তু তার সাহসিকতা আমাদের আলো দেখায় তুহিনের কলম থেমে গেছে, কিন্তু তার সাহস,অনুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি এবং সত্য বলার দৃঢ়তা আজও জেগে আছে। প্রশাসনের মানবিক সহায়তা প্রশংসনীয়,তবে ন্যায়বিচার তখনই পরিপূর্ণ হবে, যখন তুহিন হত্যাকাণ্ডের মূল চক্র ভেঙে ফেলা যাবে। সেই লক্ষ্যে তুহিনের পরিবার এখন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের হস্তক্ষেপ চায়।চান রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি,সরকারি ক্ষতিপূরণ।
এবিডি.কম/শিরিন আলম