নিজস্ব প্রতিবেদক:
সাভারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রের অভিভাবককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাভারের রেডিকলোনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক বিদ্যুৎউৎসাহী সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মাহবুবা আক্তার লিপির বিরুদ্ধে এক ছাত্রের অভিভাককে মারধরের অভিযোগ এসেছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মিতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মারধর, অভিভাবকদের বিভিন্ন হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সাবেক ঐ বিদ্যুৎউৎসাহী সদস্য এবং সহকারী শিক্ষিকা, তারা দু-জন আপন বোন বলে জানা যায়। বিদ্যালয়ের ভারতী নামে এক অভিভাবকের উপর বিদ্যুৎউৎসাহী সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মাহবুবা আক্তার লিপি ক্ষিপ্ত ও রাগান্নিত হয়ে বিদ্যালয়ে ভিতর থেকে ধাক্কিয়ে চর থাপ্পর মেরে বিদ্যালয়ের বাহিরে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। এছাড়াও ভারতীর ছেলে তৃতীয় শ্রেনিতে পড়া গৌরহুরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে বহিস্কার করাসহ এলাকা থেকে ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি প্রদান করে। এদিকে বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাভার মডেল থানা পুলিশ ও সাভার উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মাহবুবা আক্তার লিপির সাক্ষাতকার গ্রহন করতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করে বলেন, আমি সব টিভি মালিকের কাছে গিয়ে সাক্ষাতকার দিয়ে আসবো। সকল টিভির মালিকরা তার পরিচিত ও কাছের এমনটাও জানান তিনি। অপরদিকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মিতার বিরুদ্ধে প্রায় সকল শিক্ষার্থীদের ক্লাসকক্ষে মারধরের অভিযোগ ছাড়াও ক্লাসে ও ক্লাসের বাহিরে পান জর্দা খাওয়ার, তাদের দিয়ে পান এনে পান খেয়ে পরিবেশ নস্ট করার ও ঠিকমত পাঠদান না করিয়ে বরং শিক্ষার্থীদের মারধর করে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়র অভিযোগ ছাত্রছাত্রীদের। সাংবাদিকদের শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, এ সব ঘটনা কারো কাছে বললে তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি। তাই শিক্ষিকা তাদের সাথে যে আচরন করে তারা এর সুষ্ঠ বিচার দাবী করে প্রশাসনের কাছে। এদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৫ম শ্রেনির মবিন, ৫ম শ্রেনির জিহাদ, ৫ম শেনির তামান্না,৪র্থ শ্রেনির মীম, ৫ম শ্রেনির রীমাসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী ঐ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মারধর করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করে সাংবাদিকের নিকট। নাছিমা নামে এক অভিভাবক সাংবাদিক শেখ এ কে আজাদের নিকট অভিযোগ করে বলেন, তার এক ছেলে ২য় শ্রেনিতে ২০১৭ সালে লেখাপড়া করতো। কিন্তু হঠাৎ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মিতা অসৌজন্যমূলক আচরন করে তার ছেলেকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে এ অভিযোগ করলে সাভার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তাফসিরা ইসলাম লিজার দৃষ্টি গোচর করা হলে ঐ শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি মাহবুবা আক্তার লিপির নিকট তার বিরুদ্ধে সাভার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। সরকারী ভর্তির নিয়মনীতির প্রতি বৃদ্ধাআঙ্গুল দেখিয়ে শ্রেনিভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা ভর্তির টাকা গ্রহন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং সাভার পৌরসভায় থেকে বিদ্যালয়ের প্রাচীর নির্মানের জন্য ৫০ হাজার টাকা রেডিওকলোনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিখা রানীর যোগসাজসে টাকা উত্তোলন করে। পরে প্রাচীর নির্মানের কোন কাজ না হওয়ায় তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু মাহবুবা আক্তার লিপি তার বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগ মিথ্যা অপ্রচার করছে একটি মহল বলে জানান। রেডিওকলোনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিখা রানীর নিকট ভর্তি বাবদ শিক্ষার্থীর নিকট টাকা গ্রহনের কথা জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেছেন। এদিকে সাভার উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা তাফসিরা ইসলাম লিজা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আস্বস্ত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে সাতদিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সকলকে ঠিকমত বিদ্যালয়ে এসে পাঠদান করার জন্য তিনি অনুরোধ করেন। পাশাপাশি কারো কোন অভিযোগ থাকলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে তার মোবাইল নম্বর কল দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।