ইরানের বিরুদ্ধে চালানো যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অগ্রগতি কিছুটা সময়ের জন্য থেমে গেলেও সামগ্রিক সক্ষমতা খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক মূল্যায়নে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মূল্যায়ন তৈরি করেছে পেন্টাগনের গোয়েন্দা শাখা এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা ডিআইএ)।একাধিক সূত্র জানায়, এই প্রাথমিক বিশ্লেষণ তৈরি করা হয়েছে ইরানে চালানো মার্কিন হামলার পর ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড পরিচালিত যুদ্ধ-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে। মূল্যায়নে যুক্ত থাকা দুজন ব্যক্তির বরাতে সিএনএন বলছে, হামলার ফলে ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ ধ্বংস হয়নি। এমনকি বহু সংখ্যক সেন্ট্রিফিউজ এখনো অক্ষত রয়েছে।
আরেকটি সূত্র আরো জানায়, হামলার আগে এসব ইউরেনিয়াম সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, ফলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ কম। তাদের মতে, এই হামলা ইরানকে সর্বোচ্চ কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে দিতে পেরেছে, কিন্তু এর চেয়ে বেশি নয়।
অন্যদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের ইউরেনিয়ামের মজুদ এখনো অপসারণ করা হয়নি এবং বেশিরভাগই মাটির গভীরে সুরক্ষিত রয়েছে। যদিও ইরান দাবি করছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি একান্তই শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে, বিশেষ করে জ্বালানি উৎপাদনের জন্য।
মার্কিন পক্ষ এখনো হামলার পরিপূর্ণ প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিত নয়। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইরানের ভেতর থেকেও বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে করে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত মাত্রা নির্ধারণ করা যায়।
তবে হোয়াইট হাউজ এই গোয়েন্দা মূল্যায়নকে ‘সম্পূর্ণ ভুল’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট সিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, এই মূল্যায়ন একটি ‘অতি গোপনীয়’ নথি, যা জনসম্মুখে প্রকাশ করা যায় না। তিনি অভিযোগ করেন, একজন অজ্ঞাত, নিম্নস্তরের এবং ব্যর্থ কর্মকর্তা এই তথ্য ফাঁস করেছেন। তার ভাষায়, এই ফাঁসের উদ্দেশ্য ছিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হেয় করা এবং সফল মিশনে অংশ নেওয়া মার্কিন পাইলটদের অসম্মান করা।