জবি প্রতিনিধি।। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিমের ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়ে এক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। ওই শিক্ষার্থীর ক্লাস, পরীক্ষা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের অনুমতিও আমলে নিচ্ছেন না তিনি। পরিক্ষায় বসতে গেলে ছাত্রলীগ দিয়ে মার খাওয়ানো ও একাডেমিক কার্যক্রম চালাতে না দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। জানা যায়, গত ২২ মে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান সোহান ও মাহমুদুল হাসান মিশু, মিতৌরা মাহজাবিন ও সানজিদা আক্তারের নামে ‘ধারাবাহিক অপরাধমূলক কর্মকান্ড’ এর অভিযোগ তুলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিম।
এরপর গত ৩ সেপ্টেম্বর মাহমুদুল হাসান সোহান ও মাহমুদুল হাসান মিশুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর বাদী, বিবাদী ও সাক্ষীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সহকারী প্রক্টর শিল্পী রানী সাহা ও মো. মহিউদ্দিন।জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মাহমুদুল হাসান সোহানকে সাময়িক বহিষ্কার ও মাহমুদুল হাসান মিশুর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তার একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করার সুপারিশ করা হয়।এরপর সুপারিশ সাপেক্ষে মাহমুদুল হাসান সোহানকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।এদিকে ওই দুই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কোন সিদ্ধান্ত তোয়াক্কা না করেই তাদেরকে কোন ক্লাস, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়নি বিভাগের চেয়ারম্যান।
মাহমুদুল হাসান মিশুর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলেও গত ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় বসতে দেয়া হয়নি।পরীক্ষার হলে থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয় এবং ওই শিক্ষার্থীকে পরবর্তী সময় পুলিশে সোপর্দ করা ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে বের হতে না দেয়ার হুমকি দেন জুনায়েদ হালিম।এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিম দৈনিক যুগান্তরকে বলেন, আমি এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি না। আমি একটি কর্মসূচিতে রয়েছি। এ বিষয়ে আমি কথা বলতে পারব না।

শিক্ষার্থী মিশু বলেন, ক্লাসে যেদিনের অপরাধের কথা বলা হচ্ছে, সেদিন আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। আমার বাবা স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি, সারাদিন সেখানে থাকতে হয়েছিল আমাকে। হাসপাতাল থেকে এসে আমি ক্লাসে অংশগ্রহণ করি। আর বিভাগীয় চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিমও সেদিন ক্লাসে আসেননি।ব্যক্তিগত আক্রোশেই চেয়ারম্যান আমাকে ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নিতে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন এই শিক্ষার্থী। এবিষয়ে রেজিস্টার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, প্রক্টর অফিসের সুপারিশ ভিত্তিতে আমরা অর্ডার করে দিয়েছি। বিষয়টা জানার পর আমি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথাও বলেছি। এখন তিনি যদি পরীক্ষা না নিতে চায় এ বিষয়ে উপাচার্য ব্যবস্থা নিবেন।
উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আমরা বলে দিয়েছি, এখন তারা যদি পরীক্ষা না নেয় আমি কি করব? আমার অনেক কাজ আছে, আমি এসব বিষয় নিয়ে বসে নেই।
এরপর উপাচার্য হিসেবে আপনার কিছু করার আছে কিনা; জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেই শিক্ষার্থী অভিযোগ দিলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।