ইমরান হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধি: কেশবপুর উপজেলার কড়িয়াখালি ডাকাতিয়া বিলে খেজুরের রস সংগ্রহে গাছ কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা । কেশবপুরের যশ খেজুরের রস’ প্রচলিত প্রবাদ ধারণ করে আসছেন এ উপজেলাটি। কয়েক দিনের মধ্যেই দেখা মিলবে কেশবপুর উপজেলার প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে শুরু হবে খেজুরের রস সংগ্রহ করে ঝালানোর কাজ , সাথে আমন ধানের নুতন চাউলের গুড়া দিয়ে পিঠাপুলি উৎসব । তৈরি হবে গুড় -পাটালি সহ হরেক রকমের বাহারি নকশার লোভনীয় নানা ধরণের পিঠাপুলি ইত্যাদি।
শীত মৌসুম শুরু হতে না হতেই রস ও গুড়ের চাহিদা মেটাতে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খেজুর রস সংগ্রহের কাজে । ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের পাতা ছাটাই করে ছাল কেটে রেখে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে প্রায় ৭-৮ দিন পর্যন্ত, এরপর আবার ধারালো দা দিয়ে সোনালী অংশ বের করা হয়, গ্রামের ভাষায় যাকে আমরা বলি (চাঁচ) দেওয়া।
এই চাঁচ দেওয়ার এক সপ্তাহ পরে কেশবপুরের আঞ্চলিক ভাষায় বলে (বাঁশের তৈরি নলি) বসিয়ে মাটির তৈরি ভাড় পেতে শুরু হবে সুস্বাদু খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ। প্রভাতের শিশির ভেজা ঘাস আর ঘন কুয়াশার চাদরে জানান দিচ্ছে শীতের আগমনি বার্তা। এই মৌসুমে খেজুরের রস দিয়ে কেশবপুরের গ্রামীণ জনপদে শুরু হবে শীতের আমেজ।
শীত যত বাড়বে খেজুরের রসের স্বাদ ও চাহিদাও তত বাড়বে, গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে আবহমান কাল থেকে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে সুস্বাদু পিঠা ও পায়েস । বর্তমানে কেশবপুরের কারিগরদের তৈরি দানা গুড় ও পাটালি গুড়ের সুনাম ও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশ ও দেশের বাহিরে।
খেজুরের রস, গুড় এবং পাটালি কেশবপুরের গৌরব ও ঐতিহ্য বহন করছে। এই মৌসুমে শীতের সকালে গাছিরা গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করে প্রতি হাট বাজারের মোড়ে মোড়ে অবস্থান করেন এবং সেখান থেকে পথচারী সহ যাদের বাসা বাড়ির জন্য রস নেওয়ার প্রয়োজন তারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী কিনে নেয়। এই ভাবে চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে কেশবপুর উপজেলার খেজুরের রস ও গুড়ের এমন মধুমাখা সময়। তবে আগেকার ন্যায় এখন খেজুর গাছ লাগানো ও পরিচর্যা না করার কারণে গাছ গুলো এখন বিলুপ্ত প্রায়।