ইমন আল আহসান,কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি ঃ কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া এলাকায় প্রায় ১০০২ একর ভূমির উপর ২.৪ বিলিয়ন ডলারের ব্যয় ধরে এই প্রথম পরিবেশ বান্ধব কয়লা ভিত্তিক পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র র্নিমানাধীন কাজ শেষ হতে যাচ্ছে। নির্মানাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রথম ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে।দ্বিতীয় ইউনিট আগামী বছর ২০২০ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পটি থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে ।
এ প্রকল্পের কাজ ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে।পুরোপুরি চালু করতে দিন রাত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন চীনা ও বাংলাদেশী প্রায় নয় হাজার তিন শতধীক শ্রমিক। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বরে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে।এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দেশের বিদ্যুতের চাহিদা পুরনে এটি হবে একটি মাইল ফলক এমন অভিমত সংশ্লিষ্টদের। নির্মানাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়,নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশন (সিএমসি), চায়না যৌথভাবে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ২০১৬ সাল থেকে শুরু করে।
২০১৯ সালের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও শ্রমিক অসন্তোষের জেরসহ বিভিন্ন অনাকাংখিত ঘটনা ঘটার ফলে কিছুটা পিছিয়ে যায় এ প্রকল্পের কাজ। এসব কাটিয়েও এ বছরের ডিসেম্বরে এ বিদ্যুৎ প্লান্টের প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর ৬৬০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ ২০২০ সালে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই লক্ষ্য মাত্রাকে সামনে রেখে এরই মধ্যে প্রকল্পের সমস্ত সিভিল কাজ প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে।
সম্পন্ন করা হয়েছে ইউনিট-১ ও ২ এর টারবাইন-জেনারেটর বসানোর কাজ। বয়লার ইউনিট-১ এর হাইড্রোটেস্ট এবং ইন্সুলাশানের কাজও প্রায় শেষের দিকে। বয়লার ইউনিট-২ এর কাজ চলমান,ইউনিট-১ এর ইন্সুলাশান ও প্রেসিপিটেটরের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের মালামাল লোড আনলোডের জন্য জেটি’র কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে অনেক আগেই। এছাড়া সম্পন্ন করা হয়েছে ওয়াটার ইন্টেকের কাজ। কোল ডোম,কুলিং টাওয়ার,পানি পরিশোধন প্লান্ট,কনভেয়ার বেল্ট, প্লান্টের বিভিন্ন মটরের প্রি-কমিশন, ডিসিএস সিস্টেমের কমিশনিং এবং জি আই এস’র শেষ দিকের কাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজে বর্তমানে প্রায় ২৬০০ চীনা ও ৬৭০০বাঙ্গালী শ্রমিক কাজ করছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্র জানায়, কয়লা ভিত্তিক পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আনার জন্য কোরিয়ার একটি কোম্পানির মাধ্যমে ৪০০ কেভি এবং চীনের একটি কোম্পানির মাধ্যমে ২৩০ কেভির লাইন নির্মাণ কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলছে। এই প্লান্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ গোপালগঞ্জের সাবস্টেশনে যুক্ত হবে। সেখান থেকে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে।
নির্মানাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প সহকারি ম্যানেজার মো. শাহ মনি জিকো জানান, এ প্রকল্পের কাজ দ্রæতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে যে বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে এ পাওয়ার প্লান্ট বড় ভ‚মিকা রাখবে।
২০২০ সালে এ প্রকল্পটি পুরোপুরি চালু করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
নির্মানাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প ম্যানেজার শহিদ উল্লা ভুইয়া জানান.প্রকল্পপের কাজ দিন রাত দ্রæত গতিতে চলছে।বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হলে মানুষ খুব উপকৃত হবে। নির্মানাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক(পিডি)শাহ মো.গোলাম মাওলা জানান, ডিসেম্বরের ২৫ তারিখ প্রথম ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াট উৎপাদনে যাবে। জুনের ভিতরে বাকি ৬৬০ মেগাওয়াট পরিপূর্ন ভাবে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে।