ষ্টাফ রিপোর্টার:
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আদলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের খসড়া আচরণবিধি তৈরি করেছে প্রশাসন। শনিবারের মধ্যে এ ব্যাপারে ছাত্র সংগঠনগুলোর মতামত লিখিত আকারে প্রক্টর অফিসে জমা দিতে বলা হয়েছে।
খসড়া আচরণবিধি ইতিমধ্যেই ছাত্র সংগঠনগুলোর কাছে পৌঁছানো হয়েছে। কয়েকটি ছাত্র সংগঠন আচরণবিধি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খসড়া আচরণবিধিতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভোট দেয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান । ৭ সদস্যের কমিটিতে আছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অনুষদের ডিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুল মোকাদ্দেম (এম এম আকাশ), টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক এ জে এম শফিউল আলম ভূঁইয়া ৷
খসড়া আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচনের দিনের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রচারণা চালানো যাবে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলে মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না এবং পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।
নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন ও মোটরসাইকেল ও মোটরযান সহকারে শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করা যাবে না। ভোটারদের আনা-নেওয়ার জন্য কোনো ধরনের যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। শুধু ডাকসু নির্বাচন কমিশন অনুমোদিত যানবাহন (স্টিকারযুক্ত গাড়ি অথবা যানবাহন) নির্বাচনী এলাকায় চলাচল করতে পারবে। শিক্ষার্থীরা ভোটকেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে বাইসাইকেল ও রিকশা ব্যবহার করতে পারবে না।
সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা বিষয়ে বলা হয়েছে, সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা করতে চাইলে অন্তত ৪৮ ঘণ্টা আগে অনুমতি নিতে হবে। একজন প্রার্থী বা একটি প্যানেলের পক্ষে প্রতিটি হলে একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি প্রজেকশন মিটিং করা যাবে।
হলের অভ্যন্তর বা ক্যাম্পাসে চিফ রিটার্নিং অফিসার অথবা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত স্থান ছাড়া কোনো সভা, সমাবেশ বা শোভাযাত্রা ও সড়কে সভা, পথসভা বা সমাবেশ এমনকি কোনো মঞ্চ তৈরি করা, পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে, এমন কোনো স্থানে নির্বাচনী প্রচারণা এবং ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রচারণা চালানো যাবে না।
ক্যাম্পাসে দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এবং আবাসিক হলে শুধু বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মাইক ব্যবহার করা যাবে। প্রতিপক্ষের সভা-সমাবেশ, শোভাযাত্রা এবং অন্যান্য প্রচারাভিযান ব্যাহত বা পণ্ড হতে পারে বা গোলযোগ সৃষ্টি হতে পারে, এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।
পোস্টার, লিফলেট ও দেয়াল লিখন বিষয়ে বলা হয়েছে, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ছাপানো ও বিলি করা যাবে। প্রার্থী নিজের ছবি ছাড়া অন্য কারও ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনো স্থাপনা, দেয়াল, যানবাহন, বেড়া, গাছপালা, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটি বা অন্য কোনো দণ্ডায়মান বস্তুতে লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো, কোনো প্রার্থীর লিফলেট বা হ্যান্ডবিলের ক্ষতিসাধন, কালি, চুন ও কেমিক্যাল দ্বারা দেয়াল বা যানবাহনে কোনো লিখন, মুদ্রণ, ছাপচিত্র বা চিত্রাঙ্কন করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না।
প্রচার চলাকালে ও নির্বাচনের দিন ভোটারদের কোনোরূপ পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন করা, উপঢৌকন বা বকশিশ দেওয়া যাবে না। নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে ছেলে প্রার্থীরা মেয়েদের হলে ও মেয়ে প্রার্থীরা ছেলেদের হলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে শুধু প্রজেকশন সভায় যোগদানে প্রবেশ করতে পারবে।