কোরআন তেলাওয়াতের ফজিলত অফুরন্ত। এ সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস রয়েছে। উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ওই ব্যক্তি, যে নিজে কোরআন শেখে এবং অন্যকে শেখায়।’ (বুখারি)। হজরত আয়শা (রা.) রসুলুল্লাহ (সা.) থেকে ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের জ্ঞানী হবে, কিয়ামতের দিন সে সম্মানিত ফেরেস্তাদের সঙ্গে থাকবে। আর যে কোরআন শেখার চেষ্টা করবে, শিখতে শিখতে সে ক্লান্ত হয়ে পড়ে অর্থাৎ শেখার জন্য সে চেষ্টা করে, তার জন্য দ্বিগুণ সওয়াব রয়েছে।’ (বুখারি)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোরআনের একটি অক্ষর পড়বে বিনিময়ে তাকে একটি সওয়াব দেওয়া হবে। আর প্রতিটি সওয়াব ১০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে।’ (তিরমিজি)।
কিয়ামতের ভয়াবহ দিন যখন আপনজন ও ধনসম্পদ কোনো কাজে আসবে না, তখন কোরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কোরআন তেলাওয়াত কর। কারণ কিয়ামতের দিন কোরআন তার তেলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করবে।’ (মুসলিম)। অন্য হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন কোরআন তার তেলাওয়াতকারী ও আদেশ-নিষেধ মান্যকারীকে বলবে, আমাকে চিনতে পারছো? আমি সেই কোরআন যে তোমাকে রোজার আদেশ দিয়ে দিনে পিপাসার্ত আর রাতে নামাজে রত রেখেছি। প্রত্যেক ব্যবসায়ীই তার ব্যবসার মাধ্যমে লাভবান হতে চায়। আজ তুমি সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছ। তারপর ওই বান্দার ডান হাতে বাদশাহি, বাম হাতে জান্নাতে বসবাসের পরোয়ানা দেওয়া হবে। মাথায় নূরের তাজ পরানো হবে এবং বলা হবে, কোরআন পড়তে থাকো আর উচ্চ মাকামে উঠতে থাকো।’ (মুসনাদে আহমাদ)।
তাই কোরআনের বেশি বেশি তেলাওয়াত, হিফজ ও গভীর ধ্যানের মাধ্যমে কোরআন তেলাওয়াত শ্রবণ করা, আর গভীরভাবে চিন্তা করা আমাদের অবশ্যই কর্তব্য। পবিত্র এই মাসে একজন মুমিনের জন্য অন্যান্য নফল ইবাদতের সঙ্গে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বাধিক নেকির আমল হলো তেলাওয়াতে কোরআন। তবে এ কথা স্মরণ রাখতে হবে, কোরআন তেলাওয়াতের এ নেকি পেতে হলে কোরআন সহিভাবে পড়তে হবে। ভুল পড়লে নেকির পরিবর্তে গুনা হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, নন্দীপাড়া মাদ্রাসায়ে সোনার মদিনা, বাসাবো, খিলগাঁও, ঢাকা