নিজস্ব সংবাদদাতা।। সাভারের আশুলিয়া থানা এলাকায় অভিজান চালিয়ে লিপি ডেইরি ফার্মের মালিক ও পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদার-কে হত্যার অভিযোগে ১ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৪। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত্রে আশুলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। তবে এ হত্যা কাণ্ডের সাথে নির্বাচনী সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই বলেও নিশ্চিত করেছে র্যাব। গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন-১) মোহাম্মদ আবদুল লতিফ খাঁন (৪০) পিতা মরহুম আলী মোহাম্মদ খাঁন,গ্রাম ডেন্ডবর,থানা আশুলিয়া,জেলা ঢাকা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যার জানায়,গত বুধবার ৭ তারিখ সকালে আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় লিপি ডেইরি ফার্মের কাজিমুদ্দিন (৫০)-এর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কাজিমুদ্দিনের স্ত্রী আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। পরে বৃহস্পতিবার রাত্রে র্যাব-৪-এর একটি আভিযানিক দল আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ আবদুল লতিফ খাঁন নামের একজন-কে গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া র্যাব আরোর জানায়,গ্রেফতারকৃত লতিফ নিহতের বড় ভাইয়ের ছেলে। আসামি লতিফের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই সে তার চাচাদের সাথে বসবাস করতো। লতিফের পৈত্রিক সম্পত্তি অংশীদারিত্ব নিয়ে কাজিমুদ্দিনের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলছিলো। তাদের মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়া হয়তো। গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত্রে কাজিমুদ্দিনের ডেইরি ফার্মে তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে দেখতে আসে। ডেইরি ফার্মটি তার (কাজিমুদ্দিন) বাসার পাশে হওয়ায় তার স্ত্রী ও সন্তানকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। পরে মধ্য রাত্রে লতিফ ডেইরি ফার্মে এসে তার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে লতিফ উত্তেজিত হয়ে রুমে থাকা বটি দিয়ে কাজিমুদ্দিনের গলায় কোপ দিয়ে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে রুমের দরজায় তালা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে বুধবার ৭ তারিখ সকালে কাজিমুদ্দিনের স্ত্রী দরজায় তালা দেখতে পায়। রুমের অপর একটি চাবি তার স্ত্রীর কাছে থাকায় ফার্মের কাজের লোক গরুর ওষুধ নেয়ার জন্য কাজিমুদ্দিনের স্ত্রীর কাছ থেকে রুমের চাবি নিয়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় তার গলাকাটা লাশ বিছানার উপর দেখতে পায়। হত্যা কাণ্ডের এ ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে লতিফ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে আশুলিয়া এলাকায় আত্মগোপন করে। পরে বৃহস্পতিবার রাত্রে লতিফ-কে গ্রেফতার করে র্যার-৪।
উক্ত বিষয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন,গত নির্বাচনে অন্য প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে তার বাগ্বিতণ্ডা হয়েছিল। এমনকি নির্বাচনে কাজিমুদ্দিনের সমর্থিত প্রার্থী হারার পরে তাকে এ নিয়ে লজ্জা দেয়া হয়েছিল। তার পরিবারের লোকজনও বিষয়টি জানতো। কাজিমুদ্দিনের স্বজন ও স্থানীয় কিছু ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ডটি-কে নির্বাচন পরের সহিংসতা বলে ধারণা করে। পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটি একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বলে খবর প্রকাশিত হয়। এছাড়া তার আপন ভাতিজা এমন হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে এমন কোনো ধারণা তাদের ছিল না। তাই প্রাথমিক ভাবে এ হত্যাকাণ্ড-কে নির্বাচনী সহিংসতা মনে করেছিল তার পরিবার। হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।
এবিডি.কম/রাজু